তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৫ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে টাইগাররা। বাংলাদেশ এর আগে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজও জিতেছে এ সফরে
জিম্বাবুয়ের দেয়া পাহাড়সম লক্ষ্য তাঁড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে ১৩ রান যোগ করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। কিন্তু তৃতীয় ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানির বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ৭ বলে ৩ রান করে আউট হন তিনি।
দলীয় ২৪ রানে নাইম শেখ ফেরার পর সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দারুণ খেলছিলেন সৌম্য সরকার। ৬ ওভার মধ্যেই স্কোবোর্ডে ৫০ রান যোগ করেছিলেন দুজনে। কিন্তু ২৫ রান করে লুক জংউইয়ের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে ধরা পড়েন সাকিব। আউট হবার আগের দুই বলে অবশ্য হাকিয়েছেন দুটি ছয়।
দারুণ খেলতে থাকা সৌম্য ৪৯ বলে ৬৮ রান করে ফিরেছেন জংউইয়ের শিকার হয়ে। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১টি ছক্কা ও ৯টি চারে। এরপর প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করলেও বেশিদূর এগোতে পারেননি আফিফ হোসেন। তিনি ৫ বলে ১৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে বোল্ড হয়ে আউট হন।
যদিও একপ্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশের রান বাড়াচ্ছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ জয়ের দ্বারপ্রান্ত নিয়ে গিয়ে ২৮ বলে ৩৪ রান করে মুজারাবানির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন। নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে শামীম বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। শামীম ১৫ বলে ৩১ ও সোহান ১ বলে ১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড়ো ব্যাটিং করেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার মাধেভেরে ও তাদিওয়ানাশে মারুমানি। এই দুজনে ৬ ওভারে যোগ করেন ৬৩ রান। পাওয়ার প্লের মধ্যেই বেশ কয়েকবার সুযোগ তৈরি করেও লুফে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের শেষ বলে মারুমানিকে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
এই ওপেনার ১৬ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলেছেন। সাইফউদ্দিনের করা মিডল স্টাম্পের লেংস বল লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন মারুমানি। তবে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ওয়েসলি মাধেভেরের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রেজিস চাকাভা।
এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান উইকেটে এসেই টাইগার বোলারদের ওপর চড়াও হন। নাসুম আহমেদের এক ওভারেই তিনি মারেন ৩ ছক্কা। সেই ওভার থেকে আসে ২১ রান। ২৮ বলে ৪৮ রান করা চাকাভাকে সীমানায় দারুণ এক ক্যাচ নেন নাঈম শেখ ও শামীম হোসেন মিলে।
এই ইনিংস খেলার পথে ৬টি ছক্কার মার মারেন চাকাভা। সৌম্যর করা অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্লগ সুইপ করে উড়িয়ে মেরেছিলেন চাকাভা। সেই বল জমা পড়েছিল নাঈমের হাতে। যদিও ভারসাম্য রাখতে না পেরে তিনি পড়ে যাচ্ছিলেন সীমানার বাইরে। সেই সময় বল ছুড়ে মারেন পেছনে থাকা শামীমের দিকে। সেই বল অনায়েশেই মুঠোবন্দী করেন শামীম।
একই ওভারের পঞ্চম বলে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে বোল্ড করেছেন সৌম্য। লেংথ বল আলতো করে লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন রাজা। তবে বল ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্পে চলে যায়। এর ফলে শূন্য রানেই ফিরতে হয়েছে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ককে।
এরপর ডিওন মেয়ার্সকে নিয়ে ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ওপেনার মাধেভেরে। এরপর ৩৬ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে সাকিব আল হাসানের বলে সুইপ করতে গিয়ে শরিফুল ইসলামের হাতে ধরা পড়েন। শেষ দিকে ডিওন মেয়ার্স শরিফুলের স্লোয়ারে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে নাসুম আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন।
তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১ বলে ২৩ রান। শেষ পর্যন্ত রায়ান বার্ল ১৫ বলে ৩১ ও লুক জংউই ১ রান করে অপরাজিত থেকে জিম্বাবুয়ের বড় সংগ্রহ নিশ্চিত করেছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
জিম্বাবুয়ে: ১৯৩/৫ (২০ ওভার) (মারুমানি ২৭, মাধেভেরে ৫৪, চাকাভা ৪৮, মেয়ার্স ২৩, বার্ল ৩১*; সৌম্য ২/১৯, সাকিব ১/২৪)
বাংলাদেশ: ১৯৪/৫ (১৯.২ ওভার) (সৌম্য ৬৮, সাকিব ২৫, নাইম ৩, আফিফ ১৪, মাহমুদউল্লাহ ৩৪, শামীম ৩১*, সোহান ১*; মুজারাবানি ২/২৭, জংউই ২/৪২)