জনভোগান্তি কমাতে ভূমি জরিপ শেষে রেকর্ডের ভুল মাঠপর্যায়ে সংশোধন করতে সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ভূমি জরিপ শেষে চূড়ান্তভাবে মুদ্রিত ও প্রকাশিত খতিয়ানে করণিক ভুল, প্রতারণামূলক লিখন সংশোধনের জন্য এসি ল্যান্ডদের প্রতি এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) এক পরিপত্রে দেশের এসি ল্যান্ডদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়। কীভাবে কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও দিকনির্দেশনাও রয়েছে সাত পৃষ্ঠার এই পরিপত্রে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, মাঠপর্যায়ে সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) এসব ভুল ঠিক করে দিতে পারলে খতিয়ানের ছোটখাটো ভুলত্রুটি সংশোধনে ভূমির মালিককে দেওয়ানি আদালত ও ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে না।
এর মধ্য দিয়ে ভূমিসংক্রান্ত জনদুর্ভোগ অনেকাংশে কমে আসবে বলেও মনে করছে সরকার। আর পরিপত্র থেকে জমির মালিকরাও পাবেন ভূমিসংক্রান্ত দিকনির্দেশনা।
এর আগে ২০১৫ সালে মাঠপর্যায়ে খতিয়ানের ভুল সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি নানা কারণে সম্ভব হয়নি। তাই জনভোগান্তি দূর করার কথা চিন্তা করেই মন্ত্রণালয় আবার পূর্ণ নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্রটি জারি করেছে বলে জানান আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান।
পরিপত্রে বলা হয়, জরিপের পর সেবাগ্রহীতাকে খতিয়ানের ভুল যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে সংশোধনে সেবা দিতে সরকার সচেষ্ট।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘খতিয়ানের করণিক ভুল, প্রতারণামূলক অন্তর্ভুক্তি এবং যথার্থ ভুল সংশোধন বিষয়ে আইন ও বিধিমালায় উল্লিখিত বিধান এবং জারি করা পরিপত্রের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণের স্বার্থে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে সচেষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ধারণার সুস্পষ্টতা ও সমরূপতা একান্ত প্রয়োজন।’
পরিপত্রে বিভিন্ন আইনের সূত্র উল্লেখ করে নানা বিষয়ের ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ভূমি জরিপের পর চূড়ান্তভাবে মুদ্রিত ও প্রকাশিত খতিয়ানের ‘করণিক ভুল, প্রতারণামূলক লিখন এবং যথার্থ ভুলের’ বিভিন্ন সম্ভাব্য ধরন সম্পর্কেও বলা হয়েছে পরিপত্রে। আর সংশোধনের নিয়মগুলোও উল্লেখ করা হয়েছে পরিপত্রে।
রেকর্ড সংশোধনে আবেদনের প্রক্রিয়া নিয়ে বলা হয়েছে, ‘সংশ্লিষ্ট আবেদনের সঙ্গে আবেদনকারীকে নির্ধারিত পরিমাণ কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হবে। অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করার সিস্টেম চালু হলে তা নির্ধারিত সরকারি হিসাবে সরাসরি দিতে হবে।’
সংশ্লিষ্ট মিসকেসে রেকর্ড সংশোধনের আদেশ হওয়ার পর আবেদনকারীর কাছ থেকে নামজারি মামলার জন্য নির্ধারিত হারে নোটিশ জারি ফি, রেকর্ড সংশোধন বা হালনাগাদকরণ ফি এবং খতিয়ান সরবরাহ ফি একত্রে ডিসিআর-এর মাধ্যমে আদায় করা হবে। যা সরকারি কোষাগারে জমা হবে।
জেলা প্রশাসক বা তার প্রতিনিধির মাধ্যমে সরকারের এক নম্বর খাস খতিয়ানের ভুল সংশোধনে আবেদনের কোর্ট ফি বা অন্যান্য ফি আদায় করা হবে না।