দীর্ঘ ৫৫ বছর পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে পুনরায় পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। রবিবার (১ আগস্ট) থেকে এ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এদিন ৩০টি ওয়াগনে ভারত থেকে পাথর ও গম নিয়ে আসবে একটি ট্রেন।
পণ্যবাহী ট্রেনটির গন্তব্য হবে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম তীর ও খুলনার নওয়াপাড়া পর্যন্ত। সৈয়দপুর ও নওয়াপাড়ায় পাথর খালাস হবে। তবে ভারতীয় ইঞ্জিন চিলাহাটি অবস্থান করবে। চিলাহাটি থেকে ভারতীয় পণ্যের বগিগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যাবে বাংলাদেশের ইঞ্জিন। পণ্য খালাস শেষে ফিরলে বগি নিয়ে যাবে ভারতীয় ইঞ্জিন।
চিলাহাটি-চিলাহাটি সীমান্ত রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম জানান, রেলপথ পর্যবেক্ষণে পরীক্ষামূলকভাবে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১টায় ভারতীয় রেলওয়ের দুটি লোকোমোটিভ ট্রেন ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি ছেড়ে আসে। পরে হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে নীলফামারী সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের চিলাহাটি রেলস্টেশনে পরীক্ষামূলক যাত্রা সম্পন্ন করে আবার ফিরে যায়।
এর আগে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করা হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিটিশ আমল থেকে রেল যোগাযোগ ছিল চিলাহাটি ও হলদিবাড়ির মধ্যে। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর তৎকালীন পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর এই ভূখণ্ডের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান। তারপর তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের নীলফামারি জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার মধ্যে রেল যোগাযোগ অব্যাহত ছিল ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত।
১৯৬৫ সালে কাশ্মির ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে এই রুটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়; তারপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও বহু বছর বন্ধ ছিল এই যোগাযোগ।
২০১৫ সালে দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের রেল কর্মকর্তাদের মধ্যে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে উভয় দেশের রেল বিভাগের কর্মকর্তারা হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুটে ব্রডগেজ রেল লাইন স্থাপনে ঐকমত্যে পৌঁছান।