মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে থাকা আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনির সদস্যপদ স্থগিত করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।
শনিবার বিকেলে এফডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির এ সিদ্ধান্ত জানান সভাপতি অভিনেতা মিশা সওদাগর।
তিনি বলেন, ‘কোনো শিল্পীর ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের দায় শিল্পী সমিতি নেবে না। আমরা আপাতত তার সদস্যপদ স্থগিত করেছি।’
সেই সঙ্গে গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী একার সদস্যপদও স্থগিত করেছে শিল্পী সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা বলেন, ‘পরীমনির ঘটনাটি আমাদের চলচ্চিত্র তথা শিল্পী সমাজের জন্য বিব্রতকর। আমরা কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেই না। পরীর বিষয়টির মামলা চলমান। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক নয়। আমরা তাই পরীমনির সদস্যপদ স্থগিত করলাম। আজ কেবিনেট বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে সব সদস্যের মতামত নেয়া হয়েছে।’
পরীমনিকে আটকের চারদিনের মাথায় এ বিষয়ে অনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।
সমিতির নেতারা মনে করছেন, পরীমনি সমিতির সংবিধান পরিপন্থী কাজ করেছেন। তার কার্যকলাপে সমিতির সম্মানক্ষুণ্ন হয়েছে।
জানা গেছে, সমিতির গঠনতন্ত্রের ৬-এর ‘খ’ ও ৯-এর ‘গ’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সমিতির কোনো সদস্য যদি সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে কোনো কাজে লিপ্ত হয় সঙ্গে সঙ্গে তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত হবে। তবে আদালতে যদি প্রমাণ হয় তিনি নির্দোষ, তাহলে ফিরে পাবেন পদ। আর যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে আজীবনের জন্য সমিতির সদস্যপদ হারাবেন।
এদিকে পরীমনির বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেছিলেন, ‘শিল্পী সমিতি সবসময় শিল্পীদের পাশে থাকবে। এটা ব্যক্তিগত সমিতি না, শিল্পী সমিতি। সভাপতি হিসেবে শিল্পী সমিতির সংবিধান আমাকে সম্মানিত রাখতে হবে। সংবিধান যা বলবে তাই হবে। এ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। সংবিধান পাশ কাটিয়ে যেতে পারব না।’
শুক্রবার (৬ আগস্ট) ডিবি কার্যালয়ে পরীমনি প্রসঙ্গে জায়েদ খান বলেছিলেন, ‘শিল্পী সমিতি তৈরি হয়েছিল শিল্পীদের স্বার্থ আর সম্মান রক্ষার জন্য। শিল্পীরা নিজেরাই বিনয়ী হবেন, সমাজের আইডল হবেন। তারা যদি অপকর্মে জড়িয়ে যায় তাহলে আমি বলব, এর দায় সম্পূর্ণ ব্যক্তির। শিল্পীদের উচিত ভালোবাসা দিয়ে দর্শক হৃদয় জয় করা। অর্থের লোভে কেউ খারাপ কাজে জড়িত হলে এ দায় ব্যক্তির।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘শিল্পীর ভালো কাজে সমিতি পাশে থাকবে। খারাপ কাজে কেন থাকবে? সমিতি কোনো খারাপ কাজের সমর্থন দিতে পারে না। পরীমনির বিষয়টি বিচারাধীন। যেহেতু তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়েছে সেহেতু গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সমিতি ব্যবস্থা নিতে পারবে। আমরা ভালোকে ভালো বলব, খারাপকে খারাপ বলব।’
এ সময় মিশা সওদাগর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, সহ-সভাপতি ডিপজল ও রুবেল। এছাড়া কার্যকরী কমিটির অরুণা বিশ্বাস, অঞ্জনা সুলতানা, আলেকজান্ডার বো, জ্যাকি আলমগীর এবং আলীরাজও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বিকালে পরীমণির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এ সময় বিপুল পরিমাণে মাদকসহ তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে পরীর বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। আদালতে তোলার পর তাকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার মামলাটি হস্তান্তর করা হয়েছে সিআইডির কাছে।