তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার পূর্ণ ইতিহাস প্রকাশ পেলে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা লজ্জিত হবেন।’
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিএফডিসি শুটিং ফ্লোরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন এবং চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সমিতিসমূহ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: মুরাদ হাসান ও সচিব মো: মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, সাধারণ সম্পাদক শাহিন সুমন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল। জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যান্য কুশীলবদের মুখোশ ধীরে ধীরে উন্মোচিত হবে। যখন ইতিহাস পরিপূর্ণভাবে উন্মোচিত হবে জিয়াউর রহমান কিভাবে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে বর্ণচোরা ভূমিকা পালন করেছিল, কিভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের উৎসাহ দিয়েছিল এবং পরে পুণর্বাসিত করেছিল, সেই সত্যগুলো যখন ক্রমাগতভাবে প্রকাশ পাচ্ছে এবং যখন আরো প্রকাশিত হবে, তখন যারা জিয়াউর রহমানের দল করেন, তারা লজ্জা পাবেন।’
‘জিয়াউর রহমান সেক্টর কমান্ডার হয়ে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করে আর তার স্ত্রী-পুত্রদেরকে পাকিস্তানি আর্মি একেবারে আদর যত্ন করে ক্যান্টনমেন্টে রাখে, এটি কখনো সম্ভব না’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘এতে এবং জিয়ার কাছে লেখা কর্ণেল বেগের চিঠিতেই প্রমাণিত হয় মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকাটা কি ছিল।’
মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘যে আন্তর্জাতিক শক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, তাদের সাথে যোগসাজসে, বাংলাদেশে যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধাচারণ করেছে পাকিস্তানিদের পক্ষাবলম্বন করে তাদের পক্ষে অস্ত্র ধারণ করেছে, আর বর্ণচোরা শক্তি মিলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আর সেই বর্ণচোরা শক্তির মধ্যে ছিল খন্দকার মোশতাক আহমেদ, জিয়াউর রহমান। কারণ জিয়াউর রহমান ২৫ মার্চ সোয়াচ জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করছিল, পরে সেখানে যখন বাধা দেয়া হয়, সে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা করলেখা পাহাড়ে চলে যায়।’
বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চলচ্চিত্র শিল্প আজকে নানামুখি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এটি সঠিক, কিন্তু এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আমরা ইতিমধ্যেই অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। চলচ্চিত্র শিল্পীদের বহুদিনের দাবি প্রধানমন্ত্রী পূরণ করেছেন। চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সিনেমা হল পুণনির্মাণ, বন্ধ হল চালু করা ও নতুন হল নির্মাণের জন্য এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠিত হয়েছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধি এবং হল মালিক, প্রযোজকসহ আরো যাদের প্রয়োজন, তাদেরকে ডেকে একটি বৈঠক করবো যাতে এই খাত থেকে সবাই খুব সহসা উপকার পায়।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: মুরাদ হাসান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর আসল খুনী। তার মরণোত্তর বিচার করতে হবে।’
সচিব মো: মকবুল হোসেন তার বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম-যুদ্ধের মধ্যদিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছেন। তার আদর্শ প্রতিটি বাঙালির অনুসরণীয়।’