স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলা ও উদ্ভূত পরিস্থিতি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। যতটুকু জানতে পেরেছি, অপ্রয়োজনীয় পোস্টার বা বর্জ্য অপসারণের জন্য কিছু লোক গেলে সেখানে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।
রোববার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে ভুল বোঝাবুঝিই হয়েছে। আপনারা কি অন্য কিছু মনে করেন নাকি? সব ঘটনাই ভুল বোঝাবুঝি থেকেই হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধও ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছিল। মহাযুদ্ধ যদি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হতে পারে তাহলে এখান থেকে ভুল বোঝাবুঝি হবে না কেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নিঃসন্দেহে ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে।’
ভুল বোঝাবুঝি অবসান হওয়ার পথে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বরিশালের বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে অভিযোগের পরও তারা কিন্তু কাজ করেছে। তারা এখন সেখানে ক্লিন করেছে। সেখানে প্রতিবাদ মিটিং-মিছিল ছিল, সেটাতো বন্ধ হয়েছে। হয়তো প্রশাসন ও মেয়র পরস্পরের মধ্যে কিছু আলোচনা হয়েছে। তারা হয়তো একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে এসেছে। তারা নিজেরা দায়িত্বশীল এবং সেখানে স্থানীয় যে প্রশাসন আছে- বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন, নির্বাহী কর্মকর্তা তারাতো দায়িত্বশীল। মেয়রতো একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। স্বাভাবিকভাবেই তিনি একজন দায়িত্বশীল মানুষ। তারা বুঝেছে, এটা নিজেদের মধ্যে একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং। এটা কারও জন্যই শুভকর না।’
রাজনীতিবিদদের সঙ্গে প্রশাসনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে কি না এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি একেবারেই মনে করি না। একেবারেই মনে করি না। আমাদের প্রশাসনের লোকেরাও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করেছে, রাজনীতিবিদরাও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করে রাজনীতি ও পড়াশোনা করেছে। তাদের মধ্যে একটা সংযোগ সবসময় ছিল, আছে।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মতপার্থক্য থাকতে পারে। মতপার্থক্য তো থাকবেই। পরিবারের ভেতরে যেমন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতপার্থক্য থাকে, বাপ-ছেলের মধ্যে যেমন মতপার্থক্য থাকে, আমরা যেমন কাজ করি আমার অধীনস্থদের সাথে আমার যেমন কোথাও মতপার্থক্য তারপরও আমরা একসাথে কাজ করি। কখনও কখনও একটা বিষয় আমি একরকম মনে করি আরেকজন অন্যরকম মনে করে। সময়ের ব্যবধানে উভয়েই ঐক্যমতে পৌঁছায়।’
গত ১৮ আগস্ট (বুধবার) রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ব্যানার খোলাকে কেন্দ্র করে সিটি করপোরেশন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ইউএনওর নির্দেশে গুলি ছোড়ে আনসার সদস্যরা। এতে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। দুই মামলাতেই মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে রোববার বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) প্যানেল মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন ও বিসিসির রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার আবেদন দুটি করেন।