আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশগামী যাত্রীদের আরটি-পিসিআর টেস্ট শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
আজ রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হান্নান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি কন্ডিশন (শর্ত) দিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যেতে হলে যাত্রার ৪৮ এবং ৬ ঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টের ভেতরে আরটি-পিসিআর টেস্ট করতে হবে। আমাদের মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে কাজ করে বিমানবন্দরের ভেতরে একটি ব্যবস্থাপনা তৈরি করেছি। যেটা আজকে টেস্ট রান দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
তিনি বলেন, টেস্ট রান দিয়ে যদি এটি সাকসেসফুল (সফল) হয়, আমরা এয়ারলাইন্সগুলোকে জানাব। আশা করছি ২৮ তারিখ থেকে…, যেহেতু ৪৮ ঘণ্টা আমাদের সময় দিতে হবে। একটা এয়ারলাইন্সের টিকিট কাটা এবং প্রত্যেক যাত্রীকে ৪৮ ঘণ্টা আগে তাদের আরটি-পিসিআর টেস্ট করতে হবে। আশা করছি দুই-তিন দিনের ভেতরে পুরোপুরি যাত্রা শুরু হয়ে যাবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর যখনই আমাদের বিমানবন্দর রেডি বলে ঘোষণা দেবে এবং টোটাল কতজন যাত্রী তারা হ্যান্ডেল করতে পারবে জানাবে, তখন আমরা এয়ারলাইন্সকে জানিয়ে দেব। আশা করছি দুই-একদিনের ভেতর চালু হয়ে যাবে।
বিমানবন্দরে সুন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য আশেপাশের সব দেশের অন্যান্য এয়ারলাইন্সগুলো বাংলাদেশে আসার জন্য আরও বেশি আগ্রহী বলেও এসময় দাবি করেন এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমাদের বিমানবন্দরগুলো সীমিত আকারের। তারপরও যে ব্যবস্থাপনা নিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ্ এ যাবত কোন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। যার জন্য আশেপাশের সব দেশের অন্যান্য এয়ারলাইন্সগুলো বাংলাদেশে আসার জন্য আরও বেশি আগ্রহী। আমি গর্ব করে বলতে পারি, এই রিজিয়নে বাংলাদেশে যে ব্যবস্থাপনা আমরা নিয়েছিলাম প্যান্ডামিকের সময়, এটা কিন্তু বিশ্বের সবাই এপ্রিশিয়েট করেছে।
এদিকে প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর অবশেষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসানো হলো করোনা টেস্ট করার ল্যাব। শনিবার রাতে ল্যাব স্থাপনের কাজ শেষ হয়।
এই করোনা টেস্ট ল্যাব স্থাপনের যে ছয় প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয় সে প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- স্টেমজ হেলথ কেয়ার (বিডি) লিমিটেড ঢাকা, সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, এএমজেড হাসপাতাল লিমিটেড, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, গুলশান ক্লিনিক লিমিটেড ও ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, প্রবাসীদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার যাত্রা শুরুর ৬ ঘণ্টা আগে র্যাপিড পিসিআর টেস্ট করানোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বিমানবন্দরে এ ব্যবস্থা না থাকায় আমিরাতে ফিরতে পারছিলেন না প্রবাসীরা। তবে কয়েকদফা পেছানোর পর অবশেষে শনিবার ল্যাব স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ-উল আহসান বলেন, শনিবারই বিমানবন্দরের ভেতরে ল্যাব স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের দুটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠিত হয়েছে, তারাই গোটা প্রক্রিয়া দেখছেন। এছাড়াও কবে থেকে ল্যাবগুলোতে নমুনা নেওয়া শুরু হবে তাও কমিটির লোকজন বলতে পারবেন।