যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে চেক জালিয়াতি করে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারের ভ্যাট বাবদ শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ ১০ হাজার ৩৬ টাকার চেক ইস্যু করে। কিন্তু সেই চেকের বিপরীতে প্রতারক চক্র নয়টি চেকের মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন করে নেয়।
বিষয়টি বৃহস্পতিবার (০৭ অক্টোবর) বোর্ডের হিসাব শাখা থেকে ধরা পড়ে। এ ব্যাপারে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানিকে প্রধান করে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের অডিট অফিসার আবদুস সালাম জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরের বিভিন্ন মালামাল কেনা বাবদ সরকারের ভ্যাটের ১০ হাজার ৩৬ টাকার নয়টি চেক ইস্যু করা হয়। কিন্তু পরে দেখা যায়, যশোরের ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও শাহী লাল স্টোর নামে দু’টি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে সাতটি ও দু’টি (মোট নয়টি) চেকের মাধ্যমে বোর্ডের দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা তুলে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার চেকের মুড়ি বইয়ের সঙ্গে ব্যাংকের স্টেটমেন্ট মেলানোর সময় এ জালিয়াতি ধরা পড়ে। অথচ মুড়ি বাইয়ের চেকের অংকের সঙ্গে ইস্যুকৃত চেকের অংকের মিল নেই। ধারণা করা হচ্ছে, বোর্ডের কিছু কর্মচারীর যোগসাজশে ভুয়া চেকের মাধ্যমে এ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
শিক্ষাবোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী রেজা জানান, কার্যাদেশ অনুযায়ী মালামাল কিনে থাকি। কিন্তু সোনালী ব্যাংক থেকে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আমাদের নথিতে কোনো বিল ভাউচার জমা নেই। ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং এর আগে আমাদের কিছু মালামাল দিলেও শাহী লাল স্টোরের সঙ্গে কোনো লেনদেন হয়নি।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষাবোর্ড শাখার ব্যবস্থাপক এসএম শাহিদুর রেজা জানান, ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ঢাকার ফকিরাপুল ঠিকানার চেক ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখার ক্লিয়ারিং চেকের মাধ্যমে এসব টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাবোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী রেজা বলেন, কার্যাদেশ অনুযায়ী মালামাল ক্রয় করি। কিন্তু সোনালী ব্যাংক থেকে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আমাদের নথিতে কোনো বিলভাউচার জমা নেই। ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং এর আগে আমাদের কিছু মালামাল দিলেও শাহী লাল স্টোরের সঙ্গে কোনো লেনদেন হয়নি।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের চেক প্রিন্টিং করা। সেখানে হাতে লেখার সুযোগ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, জালিয়াতি করে ভুয়া চেকের মাধ্যমে এসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। যার প্রধান কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানি। কমিটির রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাজমুচ্ছাদাত বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি, রোববার সব নথি তলব করা হবে। সরকারের টাকা আত্মসাতের সঙ্গে যারাই জড়িত হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।