মোংলা কাষ্টমস হাউস থেকে প্রায় ৫৬ কোটি টাকার আমদানীকৃত গাড়ী ও বাণিজ্যিক পণ্যের নিলামে পেতে পে-অর্ডার জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার নবীনগর এলাকার সিদ্দিক টেডিং, ধানমন্ডি এলাকার মোনালিসা আক্তার সুমা ও বংশাল এলাকার বশির আহম্মেদ নামের এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ৭টি পে-অর্ডারে ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার জাল পে-অডার জমা দেন। মোংলা কাষ্টমস হাউজস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিষ্ঠান ৩টির স্বত্তাধিকারী মোঃ জাহিদ সিদ্দিক রেজা, মোনালিসা আক্তার সুমা ও বশির আহম্মেদের নামে মামলা দায়ের করেছেন। একই সাথে এই চক্রটি ইতিপূর্বে মোংলা কাষ্টমস হাউসের একাধিকবার নিলামে অংশ নিয়ে সর্ব্বোচ্চ দরদাতা হয়ে পণ্য খালাসও নিয়েছেন।
মোংলা কাষ্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের ১৩ জুন ৪০টি লটের অনুকূলে নিলাম দরপত্র আহবাণ করে মোংলা কাস্টমস হাউস। এতে একাধিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করেন। গত ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত নিলামে ৫টি লটের অনুকূলে (আমদানীকৃত গাড়ি ও বাণিজ্যিক পণ্য) ৫৫ কোটি ৯৫ লাখ ৮ হাজার ৬৪৩ টাকার সর্ব্বোচ্চ দরদাতা বিবেচিত হয় ঢাকার নবীনগর এলাকার সিদ্দিক টেডিং, ধানমন্ডি এলাকার মোনালিসা আক্তার সুমা ও বংশাল এলাকার বশির আহম্মেদ নামের প্রতিষ্ঠান তিনটি। নিলাম পাওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানকে চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার আগে দরপত্রের সাথে জমা দেয়া ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার ৭টি পে-অর্ডার চেক করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। যাচাই-বাছাইয়ে ৭টি পে-অর্ডারের মধ্যে ৫টি আইএফআইসি ব্যাংকের হলেও কোন শাখার নাম উল্লেখ নেই। আইএফআইসি ব্যাংকের ৩১ মার্চ ইস্যু করা ৪টি পে-অর্ডারে ১৪ লাখ ও ২৮ জুলাই ইস্যু করা একটি পে-অর্ডারে ২০ লাখ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের উত্তরা শাখার পে-অর্ডার দুইটিতে ১ লাখ ৩০ হাজার ও ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। মোংলা কাষ্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ আইএফআইসি ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের উত্তরা শাখার অনুসন্ধান করলে ব্যাংক দুটি থেকে জানানো হয় ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার ৭টি পে-অর্ডারই জাল। এ ঘটনার পর ২২ আগষ্ট মোংলা কাস্টমস হাউসের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ রুম্মান আলী বাদী হয়ে মোঃ জাহিদ সিদ্দিক রেজা, মোনালিসা আক্তার সুমা ও বশির আহম্মেদ নামে মোংলা থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন।
এ বিষয়ে সিদ্দিক টেডিং এর সত্ত্বাধিকার জাহিদ সিদ্দিক রেজা বলেন, নিলামের ক্ষেত্রে এ ধরণের ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে। যে যার মতো ডকুমেন্টস জমা দিবে কর্তৃপক্ষ যাচাই বাছাই করবে। তবে এটা কোন ফোজদারি অপরাধ না। আমাকে কর্তৃপক্ষ অফিসিয়ালি নোটিশ দিলে আমি অফিসিয়ালি তার জবাব দিবো। আমার প্রতিষ্ঠান কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে, এটা তাদের বিধানে থাকলে আমার কোন আপত্তি নেই।
মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার হোসেন আহম্মেদ বলেন, নিলামে অংশ নিয়ে সর্ব্বোচ্চ দরদাতা বিবেচিত হওয়ার পর ৩টি প্রতিষ্ঠানের ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার ৭টি পে-অর্ডার জাল ধরা পড়েছে। আমরা জাল পে-অর্ডারের বিষয়ে আমরা পুলিশে এজাহার করেছি। ওই প্রতিষ্ঠান ৩টিকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মোংলা কাস্টমস কর্তপক্ষের অভিযোগটি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় সংশোধন করে দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এজাহারে সংশোধিত কপি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।