জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের ডাকে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীতে বিআরটিসির কিছু বাস ছাড়া আর কোনো বাস চলতে দেখা যায়নি। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাচ্ছে না দূরপাল্লার কোনো পরিবহন।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন পথে বের হওয়া মানুষেরা। এ অবস্থায় প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। কিন্তু সে জন্য যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া।
পিপলু আহমেদ নামে ভুক্তভোগী এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘সকালে গুরুত্বপূর্ণ একটা ক্লাস থাকায় ক্যাম্পাসে না গিয়ে উপায় ছিল না। প্রতিদিন বাসে রামপুরা থেকে শাহবাগ আসতে যেখানে ২৫ টাকা খরচ হতো, আজ বাইকে গুনতে হয়েছে আটগুণ ভাড়া। ২০০ টাকা দিয়ে অনেক কষ্টে একটা বাইক ম্যানেজ করে এসেছি। এখন যাওয়ার পথে হেঁটে বাসায় যাওয়া লাগবে।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জুনায়েদ রহমান জানান,’অফিস খোলা। বের হয়ে দেখি গাড়ি নেই। বাইকে করে যাচ্ছি। ১৫ টাকার বাস ভাড়া বাইকে ১৭০ টাকা নিচ্ছে। এভাবে চলা যায়? আয় ইনকাম তো বাড়ছে না। আর সবই তো বাড়ছে।’
এদিকে শুক্রবার প্রায় ২৬টি প্রতিষ্ঠানের পূর্বনির্ধারিত চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা ছিল রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে। এদিন সকালে অনেকেই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে বের হয়েছিলেন। কিন্তু রাস্তায় এসে জানতে দেখেন গাড়ি চলাচল করছে না।
গত বুধবার মধ্যরাত থেকে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে সরকার। পরিবহন সূত্রগুলো বলছে, জ্বালানি তেলের নতুন মূল্যহার কার্যকর হওয়ার পর পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। এসব বৈঠক থেকে সরকারিভাবে ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার আগপর্যন্ত পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
তবে অধিকাংশ সংগঠনের নেতারা সরকারপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘট ঘোষণা করেসসি। অনানুষ্ঠানিকভাবে বাস, ট্রাকসহ বাণিজ্যিক যানবাহন না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। সরকারিভাবে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশে গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধ থাকবে বলে আগেই জানিয়ে দেন এ খাতের মালিক-শ্রমিকরা।