শেখ মাহতাব হোসেন :: ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রাকৃতিতে শীতের আমেজ শুরু হতে না হতেই ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন বিল খাল ও মলাশয়গুলোতে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির আগমন শুরু হয়েছে।
শীতকালে শীতের হাত থেকে বাঁচতে যে সব পাখি ওদের নিজ দেশের চেয়ে অপেক্ষাকৃত উষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে, তাদেরকে বলা হয় অতিথি পাখি বা পরিযায়ী পাখি।
প্রতিবছর শীতকালে আমাদের দেশেও কিন্তু এরকম কিছু অতিথি পাখি আসে। ওরা আসে মূলত হিমালয়ের পাদদেশ আর রাশিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে।এই পাখিগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই সুন্দর এদের গায়ের বাহারি রং। ওদের দেখলেই মন ভরে যায়। শুনবে সে সব বাহারি রঙের পাখির গল্প।
আমাদের দেশে মোট পাখি আছে প্রায় ৬২৮ প্রজাতির। এর মধ্যে ২৪৪ প্রজাতির পাখিই স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে বাস করে না। এরা আমাদের দেশের পরিযায়ী পাখি বা অতিথি পাখি। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে এরা আমাদের দেশে আসতে শুরু করে। তারপর মার্চ থেকে এপ্রিলের দিকে ওদের দেশে বরফ গলতে শুরু করলে ফিরে যেতে থাকে নিজেদের দেশে।
শীত মৌসুম আসতে না আসতেই ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে বিভিন্ন বিল, খাল ও জলাসয়ে অতিথি পাখিদের আগমন ঘটছে। আর পাখি শিকারিরা নির্বিচারে অতিথি পাখি নিধনের মহোৎসব শুরু করেছে।
উপজেলা বামুন্দিয়া,শোভনা, মাদার তলা বারই কাটি চেচুড়ী কাটেংগা গ্রাম সহ বিভিন্ন বাজারে কৌশলে এসব পাখি বিক্রি করছে। স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকরী কোন উদ্যোগ না থাকায় পাখি শিকারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে প্রতি বছরের মত এবারও সুদূর সাইবেরিয়া থেকে দেশে শীতের সময় অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে। বিশেষ করে যেসব দেশে শীতের তীব্রতা খুব বেশি, খুব ঠাণ্ডায় যেখানে পাখিগুলোর টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে; খাবার থাকে না। বাসা বাঁধার জায়গা থাকে না। সেসব দেশ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আমাদের দেশে চলে আসে। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন বিল ও জলাশয়ে প্রচুর অতিথি পাখি সমাগম ঘটে। ফলে পেশাদার শিকারীরা বিভিন্ন কায়দায় দেশি বিদেশী এসব অতিথি পাখি নিধনে তৎপর হয়ে উঠেছে।
বিভিন্ন ছোট বড় বিলগুলোতে শিকারীরা জালের ফাঁদ, বিষটোপ, কেউ ভ্যাপের সাথে কীটনাশক মিশিয়ে, বড়শিসহ অনেক কায়দায় নির্বিচারে পাখি নিধন করছে। উপজেলার এসকল বিল এলাকাগুলোতে আগত দেশি বিদেশি পাখির মধ্যে কালকুচ, হাঁসপাখি, হাঁস ডিঙ্গি, ভুদর, কাদাখোঁচা, চেপা, কাচিচোরা, মদনটাক,
শামুখখোলা, পানকৌড়ি, বগ, ইত্যাদি পাখির সমারহ রুয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার এসব বিলগুলোতে বিভিন্ন কায়দায় পাখি শিকার হচ্ছে বলে জানা যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আবদুল ওয়াদুদ বলেন, শুনেছি বিভিন্ন বিলে পাখি শিকার হচ্ছে, পাখি নিধন দন্ডনীয় অপরাধ, যারা এসব পাখি নিধন করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।