নির্বাচনের ১৭ দিন পর ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের একটি ভোটকেন্দ্র থেকে খালি ব্যালটবাক্স উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে রিটার্নিং অফিসার সুব্রত বিশ্বাস রামকৃষ্ণপুর পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে বাক্সটি নিয়ে যান।
সকালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার জের ধরে ইউপি নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে বলে জনগণ মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
গত ১১ নভেম্বর ডুমুরিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৩ নভেম্বর সকালে রামকৃষ্ণপুর পশ্চিমপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস পরিষ্কার করার সময় টেবিলের নিচে একটি ব্যালট বাক্স (BEC- 228607) ও একটি ব্যানার দেখতে পান। তখন বাক্সটি টেবিলের উপর রেখে দেন। সে অবধি ব্যালট বাক্সটি টেবিলের উপরেই থাকে।
বিষয়টি গত শনিবার থেকে ব্যাপক প্রচার পায়। সকালে ঘটনাস্থলে এসে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ কর্তৃপক্ষকে জানান। দুপুর ১২টার দিকে রিটার্নিং অফিসার সুব্রত বিশ্বাস ও ওসি ওবায়দুর রহমান রামকৃষ্ণপুর পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে বাক্সটি নিয়ে যান। এ সময় এলাকার শত শত জনগণের কাছে কর্মকর্তরা নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত হন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাদেরুন্নেসা বলেন, ব্যালট বাক্সটি দেখতে পেয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি, এটিও স্যারসহ কয়েকজনকে জানিয়েছিলাম। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, বিষয়টি আমি আজ (২৮ নভেম্বর) জেনেছি।
১২ নম্বর রংপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক আদিত্য মণ্ডল, ইউপি নির্বাচনে মেম্বার পদে পরাজিত প্রার্থী জয়দেব, অশোক ঘরামী, অনুপম মুখার্জীসহ উপস্থিত অনেকে মত প্রকাশ করেন যে, ভোটকেন্দ্র থেকে ১৭ দিনপর ১টি ফাঁকা ব্যালটবাক্স উদ্ধার হওয়া রহস্যজনক।
তারা জানান, রংপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের সাথে বুথের ভিতর থাকা প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা ভাল ব্যবহার করেনি। ইউনিয়নের শত শত লোকের উপস্থিতিতে ব্যালটবাক্স উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতি কেন্দ্রের মত এখানেও কারচুপি হয়েছে। কর্মী-সমর্থকদের ভয়ে তড়িঘড়ি করে যাওয়ার সময় এই বাক্স রেখে চলে যান তারা।
ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল গফ্ফার বাওয়ালী বলেন, এ কেন্দ্রে ভোট অত্যন্ত সুষ্ঠু হয়েছে। কারো সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়নি। তড়িঘড়ি করে ভুলবশত আমার প্রশাসনের সহযোগীরা বাক্সটি রেখে গেছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার সুব্রত বিশ্বাস বলেন, এটা ভুলবশতই রেখে গেছেন। কিন্তু সাথে সাথে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানা উচিত ছিল।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, আমি রূপসায় ডিউটিতে আছি। তবে বিষয়টি জেনেছি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে অতিরিক্ত একটা ব্যালটবাক্স দেয়া থাকে। বিষয়টি অবগত হয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদ বলেছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনপূর্বক বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।