বাগেরহাটের মোল্লাহাটে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে অনৈতিক সম্পর্কের অযুহাতে গলায় জুতার মালা পরানো এবং লাঠিপেটার মাধ্যমে সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন ও গ্রাম ছাড়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ইউপি সদস্যসহ কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে। উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নের সিংগাতী গ্রামে গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় চলে মধ্যযুগীয় কায়দায় এ জুলুম অত্যাচার ও গ্রাম থেকে বিতাড়িত করার ঘটনা। এছাড়া ওই গৃহবধূকে সমাজে কলুষিত করতে সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতনের এ ঘটনা ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ভয় ও লজ্জায় নিজ গ্রাম ছেড়ে দূরের এক আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নেয়া সীমাহীন অত্যাচার নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ জানান, আমার বাড়ির আশপাশের লোকজন আমাকে ধরে আমার সিঁড়ির কাছে নিয়ে আমার গলায় চেইন ছিল এক ভরি ওজনের, আট আনা ওজনের কানের দুল ও ৯৫ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল নিয়ে গেছে। কওসার মেম্বার ও জানিক ছিল, এরা থেকে আমারে জুতোর মালা দেছে ও কঞ্চি দিয়ে বাড়ৈছে। আমি এর সূক্ষ্ম বিচার প্রশাসনের কাছে চাই। আর এই যে ভিডিও সব জায়গা ছড়াইছে, আমার মান সম্মান যা যাবার তা তো চলেই গেইছে। আমি এর সূক্ষ্ম বিচার চাই।
এছাড়া সচেতন মহল উক্ত নির্যাতনের ভিডিও ডাউনলোড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচার দাবি করেছেন।
এঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মন্ডল ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুনীয়া আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে সরেজমিনে গেলে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য কাওসার চৌধুরী ও জানিক চৌধুরী সহ উপস্থিত বেশকিছু নারী-পুরুষ জানায়, ওই মহিলা (৩০) বিভিন্ন লোকের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করে আসছে। এছাড়া নিজের শিশু মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ওই মেয়ের শশুরের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে। যা আমাদের সকলের কাছে খারাপ লাগে। সোমবার রাতে ওই লোক ও মহিলাকে এক ঘরের ভেতরে পেয়ে তাদেরকে ধরা হয়। এরপর তার বিচার করা হয়। কেবল জুতার মালা গলায় দিয়ে ও কঞ্চির লাঠি দিয়ে বাড়িয়ে লাঞ্ছিত করছি, তার বিচার আরো কঠিন হওয়া উচিত ছিল বলেও জানান নির্যাতনকারী মেম্বার কওসার চৌধুরী।
উল্লেখ্য, এ বিষয় নিয়ে সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হয়।
এ বিষয়ে মোল্লাহাট থানা অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাশ মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ পাই নাই, যদি অভিযোগ পাই তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।