বিকৃত যৌনলালসা, প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেন ও পরকীয়া সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে কয়রায় মা-বাবা ও মেয়েকে দলবদ্ধভাবে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ছয় জন আসামীর বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অতিদ্রুত পুলিশ রিপোর্ট প্রদান করবে। সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান।
তিনি আরো বলেন, মূল আসামী আব্দুর রশিদ গাজী ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলো । রশিদকে গ্রেফতাতের পর সে জানায়, মোঃ জিয়াউর রহমান ও মোসাঃ রাজিয়া সুলতানার অবৈধ সম্পর্কের বাধা প্রদানকারী ভিকটিম হাবিবুরকে সরিয়ে দেয়ার জন্য আসামী জিয়াউর ও সামছুর এর নেতৃত্বে গত ২৫ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১১টা থেকে ১২টায় ভিকটিম হাবিবুর, তার স্ত্রী বিউটি ও কন্যা হাবিবা সুলতানা টুনিকে হাত-পা বেধে ধর্ষণ করে পানিতে ফেলে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করে।
গত বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি ) যশোর থেকে আব্দুর রশিদকে আটক করে খুলনা জেলা ডিবি পুলিশ। পরদিন শুক্রবার রাতে উপজেলার বামিয়া গ্রামের আবু বকর গাজীর দুই ছেলে পল্লী চিকিৎসক সাইফুল্লাহ(৩৫) ও শাহীন ( ৩৮), মৃত নুরমান গাজীর ছেলে আব্দুল হক (৬০) ও তার স্ত্রী তাসলিমা, আরশাদ সানার ছেলে মোস্তফা (৪০), আলী গাজীর ছেলে আল আমিন(৩৫)কে আটক করে কয়রা থানা পুলিশ।
রোববার (৯ জানুয়ারি) কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করলে আব্দুর রশিদ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পল্লী চিকিৎসক সাইফুল্লাহ, শাহীন, আল-আমিন, আব্দুল হককে ৩ দিনের রিমান্ড ও তাসলিমাকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অপর আসামি মোস্তফাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর সোমবার দিবাগত রাতে কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ গাজীর ছেলে হাবিবুল্লাহ গাজী (৩৩), তার স্ত্রী বিউটি খাতুন (২৫) ও একমাত্র কন্যা হাবিবা খাতুন টুনিকে (১৩) হত্যা করে পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় মাজেদের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় নিহত হাবিবুর রহমানের মা কোহিনুর খানম বাদী হয়ে ২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে কয়রা থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ২৪/২১।