দৌলতপুর রেলস্টেশন মাস্টার আঃ ওহাব বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়ায় সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। দৌলতপুর রেল স্টেশনে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য দৈনিক বরাদ্ধকৃত ২০টি টিকিটের বেশিরভাগ টিকিটি বুকিং সহকারী দিথী বিশ্বাসের নিকট থেকে নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন স্টেশন মাস্টার আঃ ওহাব বিশ্বাস এমন অভিযোগ করেছেন ১০ জনের অধিক যাত্রী, এলাকার ভুক্তভোগী ও স্টেশনের বিভিন্ন পদে কর্মরত স্টাফ কর্মচারীরা।
ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ইসরাফিল ও তুষার জানান, গত সোমবার (১০ জানুয়ারী) সকাল দশটায় সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য ১৩ জানুয়ারীর টিকিট কাটতে গেলে বুকিং সহকারী দিথী বিশ্বাস কোন টিকিট নেই বলে জানিয়ে দেন। এরপর ভুক্তভোগী ইসরাফিল ও তুষার পুনরায় ঘুরে বেলা সাড়ে ১১টায় স্টেশনে এসে স্টেশন মাস্টার ওহাব বিশ্বাসের নিকট গেলে তিনি তাদেরকে বলেন, একটু বাড়তি টাকা দিলেই টিকিট দেওয়া যাবে। মাস্টারের কথায় রাজি হলে বেলা সাড়ে ১২টায় তারা দুইটি টিকিট হাতে পান। টিকিট নং-০১৯২৫৯ ও ০১৯২৬১, কোচ নং-চ, আসন ৩/৪। দুটি টিকিটে ১০০ টাকা বাড়তি নিয়ে তাদেরকে টিকিট দিয়েছে।
মোঃ আহাদ, শেখ হাসান, আঃ করিম মোল্লাসহ টিকিট কাটতে আসা ১০ জনের অধিক ভুক্তভোগী জানান, আমাদের বাড়ী দৌলতপুর থানা এলাকায়। আমরা সব সময় ঢাকায় যাতায়াত করি টিকিট কাটতে এলে ২/ ৩ দিন পূর্বেই টিকিট থাকে না। আমরা এসে টিকিট পাই না। খুলনা রেল স্টেশন থেকে টিকিট আনতে হয়।
স্টেশন সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর রেল স্টেশনে দৈনিক ২০টি টিকিট বরাদ্দ থাকলেও স্টেশনের ইনচার্জ স্টেশন মাস্টার আব্দুল ওহাব বিশ্বাস বুকিং সহকারীকে তার জন্য চারটি রেখে দিতে বলেন। এই চারটি টিকিট রাখার পরেও আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু ও পরিচিত-জনদের কথা বলে বুকিং সহকারীর নিকট থেকে সু কৌশলে আরও দশটি টিকিটের মতো নিয়ে নেন তিনি (মাস্টার)। এ স্টেশনে এনালগ টিকিটিং ব্যবস্থা থাকার কারনে টিকিটগুলো গ্রহন করতে সহজ হয়।
স্টেশনের কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বিষয়ে জানান, দৌলতপুর রেল স্টেশন মাস্টার আঃ ওহাব বিশ্বাস টিকিটগুলো এখান থেকে নিয়ে অন্য স্টেশনে পাঠিয়ে দিয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করেন। স্টেশনে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে এসে স্টেশনে থামলে টিকিট চেক করতে মাস্টারের নিজস্ব ২ জন স্টাফ খাদিজা ও মোহাম্মদ বেনজির কে টিকিট চেক করতে পাঠান। খাদিজা বেগম পোটার ও বেনজির (পয়েন্টস) সিগন্যালের দায়িত্বে লাইন ক্লিয়ারের কাজ করেন। তাদের নিয়োজিত দায়িত্বে ফাঁকি দিয়ে ট্রেন এলে তারা যে প্যাসেঞ্জারদের টিকিট কাটা নেই তাদের থেকে টাকা নেন বিনিময় তাদেরকে কোন টিকিট না দিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন। সে টাকা স্টেশন মাস্টার ভাগা ভাগি করে বলে সুত্রে জানা যায়।
টিকিট চেক করবে মূলত টিকিট কালেক্টর(টিসি)। দৌলতপুর রেল স্টেশনে টিকিট কালেক্টর নেই। এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুল ওহাব বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী দিথী বিশ্বাস জানান, তিনি নতুন চাকরি করেন দুই বছর হলো তার চাকরির বয়স। তিনি স্টেশনে আসার পর থেকে স্টেশন মাস্টার চারটি টিকিট প্রতিদিন তার জন্য রাখতে বলেন ও ওই চারটি টিকিট ছাড়াও স্টেশন মাস্টার বিভিন্ন অজুহাতে আমার কাছ থেকে টিকিট নিয়ে নেন এবং আমার নাম দিয়ে তিনি টিকিটগুলো বাড়তি দামে বিক্রি করেন। বিষয়টি আমি যখন জানতে পারি তখন আমার এরিয়া ম্যানেজার খুলনার মজিবুর রহমান স্যার কে বিষয়টি জানাই। তাকে জানানোর পরেও মাস্টার আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ভাবে ভয়-ভীতি দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে টিকিট নিয়ে যান। যেহেতু মাস্টার এ স্টেশনের দায়িত্বে আছেন। তাহার কথা তো আমার শুনতে হবে। প্রতি নিয়ত যাতায়েত করেন যাত্রীগন বলেন আমরা এ রেল মাস্টার আসার পর থেকে প্রায় ৬ মাস যাবৎ এ স্টেশনে থেকে টিকিট কাটতে গেলে নাই বলে দেন। ভুক্ত ভোগি এ অঞ্চলের মানুষ এ দুনীতিবাজ স্টেশন মাস্টারের বিচার ও অপসারনের দাবি জানান।