এম. পলাশ শরীফ :: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী জোকা দরবার শরীফে তিন দিনব্যাপি ওরশ ও মেলা শুরু হয়েছে। বুধবার দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়নের মধ্যজোকা গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০২ তম এ মেলা শুরু হয়েছে।
মেলা উপলক্ষ্যে ভোর থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত মানুষা দরবারে ভীড় জমায়। প্রতিবছর স্থানীয় ভক্ত ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার মানুষ আসেন শতবর্ষী এই দরবারে। নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ সব শ্রেনীর লোকের সমাগম ঘটে এখানে। তিন দিনের এই ওরশ ও মেলায় প্রতি দিন তিন বেলাতেই কয়েক হাজার মানুষকে বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়। পীরের বাড়ির উঠোনে পাটিতে বসে মাটির পাত্রে খান ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। ওরশ উপলক্ষে দরবারের সামনের মাঠে ৩ দিনের মেলাও বসেছে। এ দরবার শরীফের প্রাঙ্গনে বিভিন্ন দোকানীও বসে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, মোড়েলগঞ্জ উপজেলার মধ্যজোকা গ্রামের মরহুম শাহসুফী হযরত রজ্জব চাঁন (রহ) একজন ধর্মীয় সাধক ছিলেন। ধর্মপালনের পাশাপাশি তার মধ্যে মানুষের সমস্যা সমাধানের মত আত্মাতিক শক্তি ছিল তার। এই কেরামতির কথা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ভীড় জমাতে থাকে। ভক্তদের পরিমান বৃদ্ধি পেলে তার নিজ বাড়িতে তিনদিনব্যাপি ওরশ শুরু হয়। বর্তমানে ১০২তম (প্রতি বছরে একবার) ওরশ চলছে এই দরবারে। শাহসুফী হযরত রজ্জব চাঁন (রহ) এর মাজার, ওরস উপলক্ষে মেলা দেখে এবং বর্তমান পীরের আথিয়েতায় খুশি বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।
যশোর থেকে রুবেল খলিফা বলেন, দশ বছর ধরে নিয়মিত এই দরবারে আসেন। এবছর পীরের বাড়ির মেহমানদের খাবারের জন্য একটি খাসি নিয়ে এসেছি। আমরা প্রায় ১০জন এক সাথে এসেছি। বরিশাল থেকে আসা রাসেল মোল্লা ও শাহানুর নামের এক ভক্ত বলেন, ছোট বেলা থেকে এই দরবারে আসি। এখানে আসলে আমাদের ভাল লাগে। মহিদুল ইসলাম নামের আরেক ভক্ত বলেন, ছোট বেলা মায়ের সাথে এই দরবারে আসতাম। তখন বর্তমান পীরের বাবা নুরিশাহ ফকির ছিলেন। তাকে মামা ডাকতাম। তখন থেকে দেখেছি এখানে অনেক মানুষ আসে। প্রতিবছরই নতুন নতুন মানুষকে দেখা যায় এখানে।
বর্তমান পীর পীরজাদা মোঃ শাহাবুদ্দিন ফকির (শাহনূরী) বলেন, দাদা মরহুম শাহসুফী হযরত রজ্জব চাঁন (রহ) এবং বাবা নুরিশাহ ফকির যৌনপুর পীর সাহেবের অনুসারী ছিলেন। এখানে তিনদিনই ধর্মীয় আলোচনা, আত্মাতিক গানসহ নানা আয়োজন থাকে। এত মানুষের সমাগম হওয়ার পরেও কোন বিশৃঙ্খলা নেই এ দরবারে। এটা শুধু আল্লাহর রহমত থাকলেই সম্ভব।