জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় টিকে থাকতে লবণ পানি অপসারনের দাবী জানিয়েছেন দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের সকল স্তরের জনগণ। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় কয়রা লিডার্স এর সহযোগিতায়, কয়রা উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরাম, উপজেলা যুব ফোরাম, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন জলবায়ু সহনশীল ফোরাম এবং সুন্দরবন ও উপকুল সুরক্ষা আন্দোলন আয়োজনে উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা জলবায়ু ফোরামের নির্বাহী সদস্য নিলীমা চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, লিডার্সের এ্যাডভোকেসি অফিসার পরিতোষ কুমার বৈদ্য, জলবায়ু ফোরামের শাহআলম, সুন্দরবন সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার সুপার আঃ মাজেদ, শিক্ষক মতিউর রহমান, ওমর আলী দঃ বেদকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিমাই চন্দ্র মন্ডল, নিমাই চন্দ্র মিস্ত্রী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি জাফর মোল্যা, বাজার কমিটির সভাপতি রাধাপদ মন্ডল, লিডার্সের সিনিয়র ফিল্ড ফ্যাসিলেটেটর মাধাই চন্দ্র, আর জি দলের সভাপতি মুকুল বিশ^াস প্রমুখ। মানববন্ধনে প্যানেল চেয়ারম্যান আঃ সালাম খান বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় কৃষি জমিতে লবণ পানি উত্তোলন করে চিংড়ী চাষ করায় দিন দিন কৃষি জমির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ফষল চাষের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। কয়রা উপজেলায় লবণ পানির চিংড়ী ঘেরের সংখ্যা ৪২০০ টি যার আয়তন প্রায় ৩৭০০ হেক্টর। লবণ পানির চিংড়ী ঘেরে বেঁড়িবাঁধ কেটে এবং পাইপ বসিয়ে লবণ পানি উত্তোলন করে, যা বেঁড়িবাঁধকে আরোও বেশি দূর্বল করে তুলছে। ফলে অল্প জোয়রেও বেঁড়িবাঁধ প্লাবিত হয়ে লবণ পানি প্রবেশ করে জীব বৈচিত্রকে ধ্বংস করছে। মানুষ জীবন জীবিকা হারিয়ে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে অথবা স্থানান্তরিত হয়ে অন্য জায়গায় বসতি স্থাপন করছে। মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথি চেয়ারম্যান আছের আলী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারনে দেশের উপকূলের জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এই সংকট মোকাবেলায় টেকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মাণ, সুপেয় পানির নিশ্চয়তা সহ উপকূলের জীবন জীবিকা রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, জনগণের আকাঙ্খাকে গুরুত্ব দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনান নেতৃত্বাধীন সরকার টেকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মানের দুটি মেগা প্রকল্প নিয়েছে। কিন্তু এখনও সেই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়নি। জনস্বার্থে দ্রুত এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে হবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা দাবী জানান, সকল ঘের ও ক্লোজারের লবণ পানি অপসারনের দাবী জানানো হয়। জলবায়ু ও দূর্যোগ কে মাথায় রেখে সকল পোল্ডারে স্থায়ী ও মজবুত বেঁড়িবাঁধ পূণঃ নির্মাণ করতে হবে। উপকূলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। একটি বাড়ী একটি শেল্টার ডিজাইন তৈরি করে মডেল বাড়ি নির্মাণ ও এই বাড়ি নির্মানে প্রণোদনা দিতে হবে। সেই সাথে সুন্দরবন সুরক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।