ইউক্রেন ইস্যুতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এরদোয়ানকে ফোন করেন পুতিন। এ সময় তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে তার দেশের সম্ভাব্য একটি শান্তি চুক্তির জন্য রাশিয়ার সুনির্দিষ্ট দাবিগুলো তুলে ধরেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
তুর্কি প্রেসিডেন্টের দপ্তরের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ফোনালাপে পুতিনকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান এরদোয়ান। এ ধরনের আলোচনার জন্য দুই নেতাকে আতিথ্য দিতে তুরস্কের আগ্রহের কথাও জানান তিনি।
এরদোয়ান বলেন, বিদ্যমান সংকটে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের পথ দেখাতে পারে। তবে কিছু বিষয়ে চুক্তি বা সমঝোতার জন্য দুই নেতার বৈঠকের প্রয়োজন হতে পারে।
দুই নেতার ফোনালাপ শেষ হওয়ার পর এরদোয়ানের প্রধান উপদেষ্টা ও মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিনের সঙ্গে কথা বলেন বিবিসির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জন সিম্পসন। উভয় নেতার ফোনালাপ যে অল্প সংখ্যক কর্মকর্তারা শুনেছেন তাদের একজন ইব্রাহিম কালিন।
ইব্রাহিম কালিনের মতে, রাশিয়ার প্রথম চারটি দাবি পূরণ করা ইউক্রেনের পক্ষে খুব কঠিন নয়। এর মধ্যে প্রধান দাবি হলো, ইউক্রেনকে এটা মানতে হবে যে, তাদের নিরপেক্ষ থাকা উচিত এবং ন্যাটোতে যোগদানের জন্য আবেদন করা উচিত নয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এরইমধ্যেই এই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন।
বাকি দাবিগুলোতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনকে একটি নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে যাতে দেশটি রাশিয়ার জন্য হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়। ইউক্রেনে রাশিয়ান ভাষার জন্য সুরক্ষা থাকতে হবে। আর ডি-নাজিফিকেশন বলে একটা ব্যাপার আছে।
বিবিসি বলছে, জেলেনস্কির জন্য রুশ সংজ্ঞার আলোকে ‘ডি-নাজিফিকেশন’ একটি আপত্তিকর বিষয় হয়ে দাঁড়াবে, যিনি নিজে ইহুদি এবং যার কিছু আত্মীয় হলোকাস্টে মারা গেছে। তবে আঙ্কারার বিশ্বাস, জেলেনস্কির জন্য এটি গ্রহণ করা যথেষ্ট সহজ হবে। তারা বলছে, সম্ভবত সব ধরনের নব্য-নাৎসিবাদের নিন্দা করা এবং তাদের দমনের প্রতিশ্রুতি দেওয়াই ইউক্রেনের জন্য যথেষ্ট হবে।
অবশ্য বিবিসি লিখেছে, এতো সহিংসতা, রক্তপাত ও ধ্বংসলীলার বিপরীতে সবমিলিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের চাওয়া অতটা কঠিন বলে মনে হচ্ছে না, কারণ অনেকেই ধারণা করেছিলেন, পুতিন হয়ত আরও কঠিন কিছু চেয়ে বসবেন।
এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন জানিয়েছেন, এসব দাবি পূরণ হওয়া সাপেক্ষে চুক্তি করার আগে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে মুখোমুখি বসতে চান। অবশ্য জেলেনস্কি অনেক আগে থেকেই রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে আসছেন।