বিগত ৫-৭ বৎসরে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে স্মরণকালের নজিরবিহীন বিসমিল্লাহ গ্রুপ , হলমার্ক গ্রুপ ও বেসিক ব্যাংক কেলেংকারীতে সরকারের ইমেজ সংকটের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংক সমুহ যে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে তা থেকে বের হয়ে আসতে অধিকাংশ ব্যাংকের প্রশাসন হিমসিম খাচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক সমুহের মধ্যে ব্যতিক্রম অবস্থানে রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড।
অগ্রণী ব্যাংকের কয়েক হাজার কোটি টাকা গ্রাহক নামক লুটেরাদের মাধ্যমে লুটপাট হয়েছে এমডি হামিদ এবং চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হক এর সময়ে । এসব লুটপাটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল তৎকালিন এমডি সৈয়দ আব্দুল হামিদ ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড ডিএমডি মিজানুর রহমান । চট্ট্রগ্রামের লালদিঘী ও আগ্রাবাদ শাখা , ঢাকার প্রিন্সিপ্যাল শাখা, আমিন কোর্ট শাখা এবং বিবি এভিনিউ শাখা থেকে এ সব লুটপাট হয়েছে যার অধিকাংশই আর ফিরে পাবার আশা নেই। চট্টগ্রামের গ্রাহক নুরজাহান গ্রুপ , ইলিয়াস ব্রাদার্স ও সিদ্দিক ট্রেডার্সের নিকট পাওনা হাজার কোটি টাকা যার অধিকাংশই আর ফিরে পাবার আশা নেই।
হাজার হাজার কোটি টাকা অনিয়ম – দুর্নীতির কারণে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ আব্দুল হামিদ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অপসারনের পর পরই বিদেশে পালিয়ে গেছেন। তার ’সেকেন্ড ইন কমান্ড’ ডিএমডি মিজানুর রহমান ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ৩ ঘন্টার মধ্যেই দুদক কর্তৃক গ্রেফতার হন। দীর্ঘদিন জেল খাটার পর জামিন নিয়েই বিদেশে পালিয়ে যান যা ব্যাংকিং জগতে সাড়া জাগানো ও নজিরবিহীন ঘটনা।
হামিদ মিজানের রেখে যাওয়া কিছু প্রেতাত্মা দুর্নীতিবাজ ব্যাংকারের অপতৎপরতা সত্বেও বাংলাদেশের স্বনামধন্য অর্থনীতিবীদ অগ্রণী ব্যাংক চেয়ারম্যান ডঃ জায়েদ বখ্ত এর সুষ্ঠ পরিকল্পনা আর দেশের ব্রান্ড ব্যাংকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শাম্স-উল ইসলাম ( যিনি দেশে সর্ব প্রথম মুজিব কর্ণার করেন অগ্রণী ব্যাংকে এবং এটা এখন দেশ বিদেশের সর্বত্র সমাদৃত) এর কাঠোর পরিশ্রম আর দক্ষ নেতৃত্বের কারণে এক ঝাঁক সাহসী ও মেধাবী ব্যাংকারের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ব্যাংক লুটেরাদের সকল প্রকার হুমকী ধমকী উপেক্ষা করে নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক । আমদানী , রপ্তানী , ফরেন রেমিটেন্স , এসএমই প্রকল্প , কৃষি ঋণ বিতরন সহ ব্যাংকিং খাতের প্রায় সকল মাপকাঠিতে এখন নেতৃত্ব দিচ্ছে অগ্রণীব্যাংক।
এই ব্যাংকে১১টি সার্কেল অফিস, ৫৩টি জোনাল অফিস এবং হেড অফিস এ ৩৭টি ডিভিশন রয়েছে। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড এর ৯৬০টি শাখা যার মধ্যে ৩৬টি কর্পোরেট শাখা ও ৪৪টি এডি শাখা রয়েছে।সকল শাখায় উন্নত তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে রিয়েল টাইম অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই ব্যাংকে আরো রয়েছে ৫টি সাবসিডিয়ারি অফিস (একটি মার্চেন্ট ব্যাংক, একটি এসএমই ফিন্যান্সিং কোম্পানি, রেমিটেন্স হাউজ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও কানাডা)।
দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডই প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে।বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলোতে ২৮০টি বুথের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ২০১০সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি থেকে ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ১৫টি উইন্ডো এর মাধ্যমে ইসলামিক ব্যাংকিং সিস্টেম পরিচালনা করা হচ্ছে।দেশ ও জাতির সেবায় এই ব্যাংক প্রতিশ্রুতি বদ্ধ ।
গত ৫ বছরে ব্যাংকটির আমানত বেড়েছে ১০৪ শতাংশ, ঋণ ও অগ্রিম বেড়েছে ১২৫ শতাংশ, বিনিয়োগ বেড়েছে ৭২ শতাংশ, মোট সম্পদ বেড়েছে ৯২ শতাংশ, গ্রামীণ ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৫৮ শতাংশ, শিল্প ঋণ বেড়েছে ১০৬ শতাংশ এবং এসএমই খাতে অগ্রিম বেড়েছে ১৬০ শতাংশ। পাশাপাশি লোকসানি শাখা কমেছে ৭৭ শতাংশ; শ্রেণীকৃত ঋণের হার ২৯ থেকে কমে ১৩ শতাংশে নেমেছে। অর্থাৎ অনেক ক্ষেত্রেই ৪৫ বছরে যা অগ্রগতি হয়েছে তার চেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে গত ৫ বছরে।
চেয়ারম্যান ডঃ জায়েদ বখ্ত এর সুষ্ঠ পরিকল্পনায় অগ্রণী ব্যাংকের অগ্রযাত্রার মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশের ব্রান্ড ব্যাংকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শাম্স-উল ইসলাম ।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ অগ্রযাত্রার যোগ্য সারথী হিসেবে ব্যাংকটিকে তিনি নিয়ে এসেছেন সম্মুখ সারিতে। ২০১৬ সালের আগস্টে দায়িত্ব পাওয়ার পর ৫ বছর ৪ মাসের পথপরিক্রমায় তিনি প্রয়োজনীয় সমর্থন ও দিক নির্দেশনা পেয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. জায়েদ বখতের নেতৃত্বাধীন অভিজ্ঞ পর্ষদের । বিশিষ্ট সাংবাদিক কাশেম হুমায়ুন , মঞ্জুরুল হক লাবলু এর মত অভিজ্ঞ পরিচালক নিয়ে গর্বীত অগ্রণী ব্যাংক দেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদানের মাধ্যমে আলো ছড়াচ্ছে দেশব্যাপী।
১৯৭২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪৫ বছরে অগ্রণী ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ৪৯ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ বছরে আমানত বেড়েছে ৫১ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। ৪৫ বছরের তুলনায় ৫ বছরে আমানত বেশি সংগ্রহ হয়েছে ২ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। ২০২১ সালের মে মাসে দেশের তৃতীয় ব্যাংক হিসাবে লাখ কোটি টাকার আমানতের মাইলফলক অতিক্রম করে অগ্রণী ব্যাংক ।
এখনও ষড়যন্ত্র হচ্ছে ব্যাংক এবং শীর্ষ ব্যাংকারদের বিরুদ্ধে। কতিপয় দুর্নীতিবাজ ব্যংকার ও লুটেরা শিল্পপতি কালো টাকায় মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে শীর্ষ ব্যাংকারদের বিরুদ্ধে। লুটেরা শিল্পপতিদের সিন্ডিকেট গত কয়েক বছরে মন মত টাকা লুট করতে না পেরে এখন তাদের মনের মত দুর্নীতিবাজ ব্যংকারকে শীর্ষ পদে বসাতে চায়। এক্ষেত্রে তাদের ১ম পছন্দ আব্দুল হাই বা”চুর লুটপাটে কংকাল হয়ে পড়া বেসিক ব্যাংকের বর্তমান এমডি আনিসুর রহমান যিনি অগ্রণীর ডিএমডি থাকাবস্থায় বহু আলোচিত লুটপাটের নেপথ্য নায়ক ছিলেন।