বৈশ্বিক মহামারির কারণে বিগত দুই বছর রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করতে পারেনি ছায়ানট। দুই বছর বিরতির পর নবআনন্দে জাগরণের বার্তা দিয়ে এবার বটমূলে বাঙালির প্রাণের উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে ছায়ানট।
শনিবার (২ এপ্রিল) বিকেলে ধানমন্ডির ছায়ানট–সংস্কৃতি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ছায়ানটের সভাপতি বরেণ্য সংগীতজ্ঞ সন্জীদা খাতুন বলেন, ‘আগ্রাসী করোনাকে দমাতে প্রায় দুবছর আমরা গৃহবন্দি ছিলাম। এক বাস্তবিক মানবিক-সামাজিক-মানসিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়কাল। সব শেকল ভেঙে বিশ্বজুড়েই আজ নব আনন্দে জেগে উঠবার আহ্বান।’
‘‘করোনাকালে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এবং রাষ্ট্রীয়-বিধান মান্য করে ছায়ানট দুবছর বর্ষবরণের অনুষ্ঠান স্বল্প পরিসরে অনলাইনে আয়োজন করেছে। এমন কি মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিককে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সাজানোর সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হই, শ্রদ্ধা জানিয়েছি কেবল অনলাইন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।’’
বাঙালির অস্তিত্ব নিয়ে পাকিস্তানের চোখ রাঙানির মধ্যে ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন শুরু হবার পর এর আগে কেবল ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়েই তাতে ছেদ পড়েছিল।
সন্জীদা খাতুন বলেন, ‘বাংলা বর্ষববরণ এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্ববাঙালির প্রধান প্রাণের উৎসব, বাঙালি ঐতিহ্যের অঙ্গ। আমাদের প্রত্যাশা, বটমূলে অর্ধ শতাধিক বছরের এই উৎসবের ধারায় বাঙলির প্রত্যাবর্তন হবে সংযমী-প্রাণবন্ত-আনন্দঘন এবং বিপর্যয় বিনাশের অঙ্গীকারে বলীয়ান।’
‘‘রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা করে, সকলকে নিয়ে নব আনন্দে জেগে ওঠার এবারের আয়োজনে ছায়ানট সর্বান্তকরণে নতুনত্ব যোগ করতে প্রয়াসী।’’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাধারণভাবে ছায়ানটের বর্ষবরণের মঞ্চে কমবেশি সোয়াশো শিল্পী থাকে। তবে স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় রেখে এবার শিল্পীসংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে দলীয় পরিবেশনার মহড়া।