ইজিবাইক চালক মেহেদী হাসান হত্যার দায়ে চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।বুধবার (৬ এপ্রিল) খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের রাষ্টপক্ষের আইনজীবী আরিফ মাহমুদ লিটন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, লবনচরা বোখারীপড়া এলাকার মীর মোহাম্মাত আলীর ছেলে মোঃ বাবু হোসেন ওরফে বাবু, দক্ষিণ লবনচরা মদিনাবাদ এলাকার নারি মোল্লার ভাড়াটিয়া মোঃ জাহিদুল ইসলাম নয়ন, মাথাভাঙ্গা মোহম্মাদীয়া জামে মসজিদ রোড ফুল মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবুল হাওলাদারের ছেলে মোঃ ফয়সাল হাওলাদার ও দারোগার লিজ এলাকার ডাঃ মরিয়মের বাড়ির পাশে মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ আবু রায়হান। রায় ঘোষণার সময় আসামি রায়হান বাদে বাকী সব আসামি পলাতক ছিল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিহত মেহেদী হাসান রাব্বি নগরীর গল্লামারী পুলিশ বক্সের পাশে ওমেদ আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া মোঃ আঃ রহিম ব্যাপারীর বড় ছেলে। সে একজন ফল বিক্রেতা। রাব্বি তার বাবার ব্যবসা দেখাশুনা করত। মাঝেমধ্যে ভাড়ায় ইজিবাইক চালাত। ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট সকালে ইজিবাইক নিয়ে বের হলে রাব্বিকে বাবা রাগারাগি করে। এ সময়ে উত্তরে সে জানায় আজকের পর থেকে আর কোন দিন ইজিবাইক চালাবেনা।
দুপুর তিনটার দিকে দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়িতে অবস্থান নেয় রাব্বি। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ইজিবাইক নিয়ে সাচিবুনিয়া কৈয়া বাজারের দিকে যাত্রীসহ রওনা হয়। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়। তার খোঁজ কোথাও না পেয়ে খোঁজ নিতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা। খোঁজ মেলে পরেরদিন সকালে, কিন্তু জীবিত নয় মৃত অবস্থায়। পরেরদিন সকাল সাগে ১০ টার দিকে রাব্বির বাবা স্থানীয়দের মুখে জানতে পারেন লবনচরা থানাধীন খোলাবাড়িয়া মৌজায় এসএসআর স্কুল কুয়েত মসজিদের পাশ এক যুবকের লাশ পড়ে আছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে গিয়ে আঃ রহিম ব্যাপারী তার সন্তানের লাশ শনাক্ত করে। পরে তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি বেশ আলোচিত হলে পুলিশ নড়েচড়ে বসে। সোর্সের মারফতে ১৩ আগস্ট পুলিশ ছোটবান্দা খাঁন বাহাদুর সড়কের হাওলাদার রাইচ মিলের ভেতর থেকে ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক উদ্ধার করে। পরে ওই এলাকা থেকে হত্যা মামলা সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে মোঃ সোহেল, মোঃ বাবু হেসেন, মোঃ জাহিদুল ইসলাম নয়ন, মোঃ ফয়সাল ও মোঃ আবু রায়হানকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদেরকে হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত আছে বলে স্বীকার করে। ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তারা রাব্বির গাড়ি ভাড়া করে। নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ছিনতাইয়ে জন্য গাড়ি থেকে নামানো হয় রাব্বিকে। বাধা দিলে মোঃ ফয়সাল হাওলাদার তার পরিহিত প্যান্টের বেল্ট খুলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রাব্বিকে।
২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি লবনচরা থানার এসআই নাসির উদ্দিন মোল্লা পাচজন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।