“সারা জীবন দুঃখ-কষ্টে গেছে, মানুষের জমিতি ঘর করে থাকছি; বান-বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজছি। কোনো দিন বাড়ী ঘরের স্বপন ছিল না। এখন জমি সহ সেমিপাকা ঘর পাচ্ছি। বলতে পারব নিজের জমি আছে , ঘর আছে। প্রধানমন্ত্রী ঘর দিছে, ঘর পায়া আমরা খুব খুশি; আল্লাহ তার ভাল করুক’- এভাবেই বলছিলেন কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি দীঘির পাড়ের গৃহহীন ও ভুমিহীন পরিবারগুলো। অন্যের ঘরে নিজের জন্ম। সন্তানের জন্মও অন্যের ঘরে। দীর্ঘ ৩০ বছর পর নিজের নামে তিনিই কিনা পাচ্ছেন জমির দলিল ও ঘরের কাগজ! তাই উচ্ছাস যেন কমছে না শাহানারার। নতুন পাওয়া ঘর ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে বললেন, আধা পাকা ঘর টি তার খুব পছন্দ হয়েছে। থাকার কক্ষের সঙ্গে থাকবে রান্না ঘর, পায়খানার ঘর। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা সাথে বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা থাকবে। পরিবার নিয়ে খুব ভালবাবে থাকতে পারব। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীন এবং দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলায় ৩য় পর্যায়ে ২য় ধাপে ভুমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য উত্তর বেদকাশি দীঘির পাড়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে ১০ টি ঘর। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি পরিবারের জন্য উপহারের ঘরে থাকার কক্ষের সাথে থাকছে, ১ টি রান্না ঘর, ১ টি টয়লেট ও একটি বারান্দা। ২ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা এবং পরিবহন বাবদ ৫ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটি ঘর নির্মাণ করা হবে।
শনিবার (৯ এপ্রিল) ১০ টি ঘরের মধ্যে ৮ টি ঘরের গ্রেড বীমের ঢালাই কাজ পরিদর্শনে আসেন খুলনা জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট পুলক কুমার মন্ডল। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ^াস, সহকারি কমিশনার(ভুমি) এম সাইফুল্লাহ, উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকত, সহকারি প্রকৌশলী আফজাল হোসেন, উত্তর বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানী, পরিষদের ইউপি সদস্য গনেষ মন্ডল, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ১০ টি ঘরের উপকারভোগীগণ।
এসময় কাজের মালমাল ও ধরণ দেখে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের এমন মানের ঘরের কাজ দেখে খুব ভাল লাগছে। স্থানীয় সকলের মতামত গ্রহন করে তিনি উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীতে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি খরচে মাথা গোজার আশ্রয়স্থল গড়ে দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করে চলেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন আমার ইউনিয়নে প্রকৃত গৃহহীন ও ভুমিহীনদের তালিকা প্রণয়ন করে নিয়মমাফিক ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ^াস বলেন, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এই ঘরগুলো করতে পেরে আমরা নিজেরাও তৃপ্ত। একটি মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর এই কথাটি যেদিন তিনি মুখ থেকে যখন বের করেছিলেন। সেই থেকেই আমরা তার নির্দেশনায় তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে দিয়েছি। এরা আগামী দিনে ভাল থাকলেই আমাদের এ কাজে নামাটা স্বার্থক ও সফল হবে।