খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে মৃত চিয়ারুন্নেছা বেগমের পরিবার। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মৃতের স্বামী মাওলানা আঃ রাজ্জাক।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গেল শনিবার রাতে বুকে ও পেটে ব্যাথা নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় দৌলতপুর কারিকর পাড়া পুরাতন জামে মসজিদের পেশ ইমামের স্ত্রী চিয়ারুন্নেছা। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। তাকে দেখাশুনার জন্য পরিবারের সদস্যরা সেখানে অবস্থান করেন।
রাত ১ টার দিকে চিয়ারুন্নেছার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। হাসপাতালে থাকা দু’ছেলে বারবার কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডাকতে যায়। দু’ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোন কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীর কাছে আসেনি। রাত পৌনে ৩ টার দিকে চিকিৎসকদের অবহেলায় মারা যান তিনি। হাসপাতালে অবস্থানরত দু’ছেলে না আসার কারণ জানতে চেয়ে প্রশ্ন করা মাত্র ইন্টার্নি চিকিৎসক মনিষ কান্তি দাস ও প্রিতম সরকারসহ ২০ জন ওয়ার্ড বয় তাদের মারধর করে। ভয় পেয়ে আমার দু’ছেলে পালাতে থাকে। লাঠিসোঠা নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়। দৌড়াতে দৌড়াতে ছেলেরা বাড়ি ফিরে আসে।
পরবর্তীতে তিনি স্ত্রীর মরদেহ গ্রহণের জন্য অপর দু’সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকসহ হাসপাতালের অন্য কর্মীরা আমাদের ওপর চড়াও হয়। এমনকি মারধরও করতে বাদ দেয়নি তারা। এতেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। পরে দু’ছেলে তরিকুল ইসলাম ও সাদ্দাম হোসেনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। স্ত্রীর লাশও দিতে তারা চায়নি। এমন পরিস্থিাতিতে ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্সকে জানালে তিনি আমাদের নিয়ে কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের কাছে যান।
মেয়রও হাসপাতালে আটক দুই সন্তানসহ স্ত্রীর লাশ ছেড়ে দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও কোন সাড়া মেলেনি। পরবর্তীতে স্থানীয়দের নিয়ে নতুন রাস্তা সড়ক অবরোধ করলে দু’সন্তানসহ স্ত্রীর লাশের মুক্তি মেলে। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন তার অপর দু’ছেলে মোস্তাকিম ও রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কাল্পনিক কাহিনী দিয়ে করা হয়েছে। মামলার ভয়ে তারা দু’জনই এখন ঘর ছাড়া। এ মামলা প্রত্যাহারের জন্য জোর দাবি করেছেন মাওলানা আ: রাজ্জাক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ছেলে মো: তরিকুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন এবং সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন খুলনা মহানগর কমিটির সহ সভাপতি সরদার আবু তাহের, শেখ মো: নাসির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান বাবলু সহ অনেকে।