মাগুরায় প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির মোবাইল ডিভাইস সহ উত্তর সরবরাহ চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ফাহিম ফয়সাল রাব্বিসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার মাগুরা এজি একাডেমি বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী তারানা আফরোজ নামে একজন পরীক্ষার্থীর শরীর তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয় ব্যাংকিং ক্রেডিট কার্ডের আকারে তৈরি মোবাইল ডিভাইসটি। তারই সূত্র ধরে আটক হয় অপর ৬ জন।
উক্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা শ্যামানন্দ কুণ্ডু জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মাগুরা এজি একাডেমি বিদ্যালয় কেন্দ্রে তারানা আফরোজ নামে একজন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল সিম ব্যবহৃত একটি ডিজিটাল ডিভাইস পাওয়া যায়। এ সময় তার শরীর থেকে কথা শোনার উপযোগী ক্ষুদ্রাকৃতির দুটি ব্লুটুথও উদ্ধার করা হয়। অজ্ঞাত কোনো স্থান থেকে প্রশ্নের উত্তর বলা হলে সে এটির মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারবে বলে জানানোর পাশাপাশি মেয়েটি নিজের অপরাধ স্বীকার করেন। এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে বলেও সে জানালে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে ওই পরীক্ষার্থীকে আটকের পর তার কাছে পাওয়া মোবাইল ডিভাইসে ব্যবহৃত সিমের সূত্র ধরে মাগুরা ডিবি পুলিশ শহরের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে অভিযান চালায়। এ সময় এ চক্রের সঙ্গে জড়িত মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ফাহিম ফয়সাল রাব্বি এবং তার খালাতো ভাই ইফতেখারুল ইসলাম টিটোকে আটক করে।
পরে একই সূত্র ধরে আমিরুল ইসলাম সোহেল ও ইসমাত আরা ঝরণা নামে আরও দুই পরীক্ষার্থী এবং তাদের সহযোগী হিসেবে শাহানাজ বেগম নামে একজনকে আটক করা হয়।
মাগুরা ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ক্রেডিট কার্ডে ঢেকে রাখা এই ডিভাইসটি একটি মোবাইল কনফারেন্সিং ডিভাইস। নির্দিষ্ট কোনো স্থান থেকে প্রশ্নের উত্তর বলা হলে এই ডিভাইস ব্যবহৃত সব পরীক্ষার্থী একযোগে সেটি সংগ্রহ করতে পারে। এটি সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রশ্নপত্র জালিয়াতি চক্রের ব্যবহৃত আধুনিক একটি প্রযুক্তি।
এ বিষয়ে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের আটকের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানান।