সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা মঙ্গলবার , ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
উপাচার্যের কর্মমেয়াদের এক বছরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় | চ্যানেল খুলনা

উপাচার্যের কর্মমেয়াদের এক বছরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

করোনা মহামারীর এক স্থবির পরিস্থিতির মধ্যে ২০২১ সালের ২৫ মে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক-গবেষক প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। তখন সারাদেশে সশরীরে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য কার্যক্রমও হয়ে পড়েছিলো স্থবির। এ পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ করলে তাঁর সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। এছাড়া করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে পড়ে থাকা শত কোটি টাকারও বেশি অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ সচল করাও ছিলো চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় তিনি যোগদানের পরপরই শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে সার্বিক ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গবেষণার ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়েছে নতুন উদ্যম। উপাচার্যের একান্ত প্রচেষ্টায় আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য এযাবতকালের সর্বোচ্চ ১৪৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকার রাজস্ব বাজেট বরাদ্দ পেয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
গত এক বছরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে উপাচার্য অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। করোনা মহামারীর মধ্যে অনলাইনে ক্লাস গ্রহণ ও পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট অর্ডিনেন্স সংশোধন করা হয়। চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত স্ট্যান্ডার্ড এন্ড ক্রাইটেরিয়া অর্জনে সরকার কর্তৃক সকল বিশ্ববিদ্যালযের জন্য প্রণীত শিক্ষক নিয়োগ ও আপগ্রেডেশন নীতিমালার আলোকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নয়ন এর ক্ষেত্রে যুগোপযোগী একটি নীতিমালা প্রণয়ন এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদনের মাধ্যমে তা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেম ওয়ার্ক (ইঘছঋ) এবং বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (ইঅঈ) এর গাইড লাইন অনুসরণ করে আন্ডার গ্রাজুয়েট ও মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ঙইঊ (ঙঁঃপড়সব ইধংবফ ঊফঁপধঃরড়হ) প্রোগ্রাম ও অর্ডিনেন্স অনুমোদন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি অটোমেশনের কাজ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পর আইকিউএসি’র মাধ্যমে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ২১টি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের মাধ্যমে অনলাইনে প্রথম বর্ষে রেজিস্ট্রেশনে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া এই মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উদ্দেশ্য সাধনসহ অন্যান্য কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য একটি অত্যাধুনিক মানের ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল পর্যায়ে গভর্নেন্স জোরদারে সিনেট কার্যকরের অংশ হিসেবে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন শেষ হয়েছে এবং গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ই-নথি কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রথম পর্যায়ে ৪টি ধাপে প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। আগামী অর্থ বছরে যথাশীঘ্র সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ে ই-নথি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে গ্রিন ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলতে ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য ৬৪ লাখ টাকার একটি পরিবেশবান্ধব প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। যার বাস্তবায়ন কাজ চলমান রয়েছে।
গবেষণা কার্যক্রম জোরদারে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বর্তমান উপাচার্য। বিশেষ করে গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি তথা নবীন-প্রবীণ গবেষকদের গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে গবেষণার অনুদান বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬২টি গবেষণা প্রকল্পে দুই কোটি টাকারও বেশি অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়েছে। মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা অনুদান প্রবর্তন করা হয়েছে। এ খাতে ইতোমধ্যে ৭৭ জন গবেষককে ৬১ লাখ ২০ হাজার টাকা আনুষ্ঠানিভাবে গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে আইকিউএসির মাধ্যমে নবীন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই গবেষণা কার্যক্রম জোরদারে ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণা সেলে স্থাপিত আরটি-পিসিআর মেশিনে করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেডিকেল সেন্টারে ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টিতে সবিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় স্টাডিজকে যুগোপযোগী করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-গবেষকদের রিসার্চ আইডি খুলতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ শিক্ষা ও গবেষণায় ৯টি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইউনিভার্সিটি-ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কোলাবরেশন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ২টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ তলা জয়বাংলা একাডেমিক ভবন, ৫ তলা আইইআর ভবন, ৪ তলা মেডিকেল সেন্টার, কেন্দ্রীয় গবেষণাগার, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের পার্শ্ব ও ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, টিএসসি ভবন, জিমনেশিয়াম কমপ্লেক্স, দুটি ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে ১২৫ কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হানাদার বাহিনীর টর্চারসেল হিসেবে ব্যবহৃত টিনশেড ঘরটিকে ‘গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ হিসেবে সংরক্ষণে মেরামত ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউজিসি থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ লাখ টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই জাদুঘরের জন্য একটি স্থাপত্য নকশা প্রণয়নের কাজও শুরু হয়েছে। উপাচার্যের নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মহিলাদের নামাজ আদায়ে একটি অংশে উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ হয়েছে।
গত অক্টোবরে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এর আয়োজনে দেশের মধ্যে প্রথম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে এনভায়রনমেন্টাল ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলতি বছর আরও ২টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এখন যা প্রয়োজন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম ইউজিসির মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ শিক্ষা-গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণে উক্ত অর্গানোগ্রামের অনুমোদন প্রয়োজন। এছাড়া ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সফট্ অবকাঠামো’ শীর্ষক ৪০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় সাপেক্ষ জমাদানকৃত ডিপিপির অনুমোদন, কমপক্ষে ১টি আবাসিক হল নির্মাণে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ, অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের ব্যয়বৃদ্ধি ছাড়াই দু’বছর (২০২৩-২০২৫) মেয়াদ বৃদ্ধি এবং জীববিজ্ঞান ভিত্তিক ৭টি বিভাগসমূহের জন্য মাঠ গবেষণারে প্রয়োজনীয় জমিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী একশত বছরের চাহিদা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ২০৩ একর জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এক বছর মেয়াদ পূর্তির প্রাক্কালে উপাচার্য বলেন, গৃহীত এসব উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় তার অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে মর্যাপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টিতে সক্ষম হবে। তিনি গত এক বছরে তাঁর কর্মমেয়াদে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাটিউটরি বডির সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কমকর্তা-কর্মচারী এবং রাজনীতিক, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, সাংবাদিক, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বসাধারণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার প্রচেষ্টায় ভবিষ্যতেও তাদের এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

https://channelkhulna.tv/

শিক্ষাঙ্গন আরও সংবাদ

খুবি ও শাবিপ্রবি দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত

খুবিতে ‘বি’ ইউনিটে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত

খুবিতে ইনোভেশন হাব স্থাপনে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে এমওইউ স্বাক্ষর

খুবিতে আইকিউএসি আয়োজিত কর্মশালা অনুষ্ঠিত

খুবি উপাচার্যের সাথে বিএইউএসটি, খুলনার উপাচার্যের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ভারতের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে খুবির এমওইউ স্বাক্ষরিত

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
উপদেষ্টা সম্পাদক: এস এম নুর হাসান জনি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: শেখ মশিউর রহমান
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
ঢাকা অফিসঃ ৬৬৪/এ, খিলগাও, ঢাকা-১২১৯।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির জন্য আবেদিত।