বাগেরহাটের রামপালে ঈদের দিন রাতে মিরা বেগম (৪২) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত ১০ জুলাই রোববার রাতে উপজেলার ঝনঝনিয়া বড়বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ময়না তদন্ত ছাড়াই মরদেহ তড়িঘড়ি করে দাফন করায় তার মৃত্যু নিয়ে জনমনে রহস্যের সষ্টি হয়েছে। সরোজমিনে ওই গৃহবধুর মৃত্যু সর্ম্পকে প্রতিবেশি ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায় ঝনঝনিয়া বড় বাড়ির বাসিন্দা মো. শাহিনুর রহমানের সাথে স্ত্রী মিরা বেগমের কোরবানির মাংশ বিতরণ ও বাবার বাড়ি বড়িতে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে ঘটনার দিন আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে শাহিন মিরা বেগমের উপর শারিরীক নির্যাতন চালান। এতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায় মিরা বেগম ওই রাতেই বাড়িতে মারা যান। প্রতিবেশিরা জানান এরপর মিরা বেগমকে গলায় দড়ি দিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে শাহিন প্রচার চালায়। পরে লোকজন এসে মিরার ঝুলন্ত মরদেহ নামিয়ে ওই রাতেই রামপাল উপজলা স্বাস্থ কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ দিকে মৃত্যুর বিষয়টি থানায় না জানিয়ে গত সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টায় তড়িঘড়ি করে উদ্যাগ নিয়ে মরদেহ দাফন করার ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মনে মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। নাম প্রকাশ না করে বেশ কয়েকজন প্রতিবেশি জানান রোববার সন্ধ্যায় তাদের মধ্যে কোরবানীর মাংশ বিতরন নিয়ে পারিবারিক দ্বন্ধের সষ্টি হয়। এ নিয়ে শাহিন তার স্ত্রী মিরাকে মারধর করেন। এতে তার মৃত্যু হয়। শাহিন মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে গলায় রশি দিয়ে মিরাকে ঝুলিয়ে রাখেন। প্রতিবেশিদের বেশির ভাগই মরদেহ দাফনের বিষয়টি জানেন না বল জানান। তারা আরো জানান শাহিনের তড়িঘড়ি করে দাফনের ব্যস্ততা ও তার আচার আচরণ দেখে আমাদের মনে সন্দেহ হয়েছে তার স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয় শাহিনুর রহমানর কাছ জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার স্ত্রী অসুস্থ ছিল। অসুস্থ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। আমার শশুর বাড়ির লোকজনের পীড়াপীড়িতে তড়িঘড়ি মাটি দেয়া হয়েছে। রামপাল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিভিন্নভাবে তথ্য পাওয়ার পর আমি শাহীনুর রহমান ও তার ছোট পুত্র আলিফ কে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। আলিফ জানায় মানুষের সাথে আমাদের শত্রুতার কারণে লোকজনে গুজব ছড়িয়েছে। তবে মিরা বেগমের স্বজনরা তার মৃত্যু নিয়ে কোন কথা বলতে চাননি।
উল্লখ্য, ইতাপুর্বে শাহিনুরের ১ম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর খুলনার দিঘলিয়া উপজলার দেয়াড়া গ্রামের মিরা বেগমকে বিয়ে করেন। মিরা বেগমের একটি পুত্র সন্তান স্নাতকে পড়াশুনা করেন। এলাকাবাসীর দাবী বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী করেছেন।