বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল ভ্যাকসিন সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছে খামারিরা। প্রতিনিয়ত চাহিদা অনুযায়ী হাঁস-মুরগির ভ্যাকসিন না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ মানুষকে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পাচ্ছেননা। বিসিআরডিভি ভ্যাকসিনের চাহিদা রয়েছে মাসে পাঁচশত সেখানে পাচ্ছেন একশত। ডাকপ্লেগ ভ্যাকসিন চাহিদা মাসে দুইশত থাকলেও সেখানে পাচ্ছেন একশত। কলেরা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে দু’মাসে গিয়ে পাচ্ছেন ৫০টি।
সরেজমিনে শনিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন সহ একটি পৌরসভায় প্রায় ৫লক্ষ মানুষের বসবাস এখানে। প্রতিনিয়ত গবাদিপশু হাঁস-মুরগি, গরু ছাগল, মহিষ সহ গৃহপালিত পশুপাখি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পরছে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে ভ্যাকসিন সরবরাহের ব্যবস্থা থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী সাধরণ মানুষসহ খামারিরা পাচ্ছেন না এ ভ্যাকসিন। প্রতিদিন এ নিয়ে গ্রাহকদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন কর্মকর্তারা ।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় রেজিষ্ট্রেশনভুক্ত খামারির সংখ্যা রয়েছে ৩হাজার ৬’শ ৬৭টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুরগির খামার রয়েছে ১৩০ এবং হাঁসের খামারও ১৩০টি কাগজে কলমে দেখানো হয়েছে। এদিকে মাঠ পর্যায়ের চিত্র রয়েছে ভিন্ন সঠিক জরিপের তালিকা নেই প্রাণিসম্পদ দপ্তরে।
বিসিআরডিভি ভ্যাকসিন (বাচ্চা মুরগি রানীক্ষেত) আরডিবি (বড় মুরগি রানীক্ষেত) প্রতিটি ভ্যাকসিনের সরকারিভাবে মূল্য তালিকায় দাম রয়েছে ১৫ টাকা। চাহিদা রয়েছে প্রতিমাসে ৫ শতাধিক। সেখানে বরাদ্দ পাচ্ছেন ১শ’। ডাকপ্লেক ভ্যাকসিন সরকারি মূল্যে ৩০ টাকা, মাসে চাহিদা রয়েছে দুইশ’ সেখানে পাচ্ছেন ১শ’। হাঁস মুরগির কলেরা ভ্যাকসিন মূল্য ৩০ টাকা, মাসে চাহিদা রয়েছে ১শ’ সেখানে দুই মাসে মিলছে না ৫০টি।
এ ভ্যাকসিন বিতরণ করছেন অফিসের একজন এ আই ফিল্ড এ্যাসিসট্যান্ড (কৃত্রিম প্রজনন) মো. আলি আকবর তিনি এ ভ্যাকসিন সরবরাহের অফিসিয়াল দায়িত্ব না থেকেও দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্বরত উপ-সহকারি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফিরোজ আলী খানের দায়িত্ব থাকলেও স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের কারনে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রেখেছেন কর্মকর্তারা তাকে।
ভ্যাকসিন নিতে আসা গ্রহক মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের নুর আলী শিকদার, বারইখালী আলী আকবর শেখ, সুতালড়ি গ্রামের মর্জিনা বেগম, ভাইজোড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম, দেবরাজ গ্রামের আলমঙ্গীর হোসেনসহ একাধিক সুবিধাবঞ্চিতরা বলেন, মুরগির ভ্যাকসিন একের অধিক চাইলেই চোখ রাঙ্গানো দেখতে হয় অফিসারদের। অনেক বাকবিতান্ডা করে দিনের পর দিন ঘুরেও প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিন পাচ্ছিনা। এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়?। এগুলো দেখারকি কেউ নেই।
এ সর্ম্পকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সঞ্চয় বিশ্বাস জানান, এ উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী হাঁস মুরগির ভ্যাকসিনের সংকট লাঘবের জন্য ইতোমধ্যে জেলা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। চলতি বছরের চাহিদার তালিকায় বেশী বরাদ্দের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।