শেখ মাহতাব হোসেন :: ডুমুরিয়ায় লালশাক চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক আবু হানিফ মোড়ল। তিনি জমি তৈরি থেকে বীজ রোপণের পর মাত্র ২৫ থেকে ৩০ দিনের মাথায় শাক বিক্রি করতে পারছেন। ফলে অল্প সময় এখন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা। ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জমি থেকে বিক্রির জন্য রোপিত লালশাক সংগ্রহ করছেন কৃষক।
এ ব্যাপারে কৃষক আবু হানিফ মোড়ল জানান, লালশাকের বীজ রোপণ করার পর এখন বিক্রির উপযুক্ত হয়েছে। তাই পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন। পাইকার শ্রমিক নিয়ে জমি থেকে শাক সংগ্রহ করে নিয়েছে। তিনি পাইকারের কাছে ৩৩শতক জমির লালশাক বিক্রি করে ২৫হাজার টাকা পেয়েছেন। পাইকারি বাজারে প্রতি শাকের আঁটি ২০/২৫ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন। তিনি জানান, শাক নেয়ার পর ওই জমি পরিচর্যা করা হচ্ছে। আশা করছি অন্যান্য ফসল লাগিয়ে অধিক ফলন হবে।
এক জমিতে বারোমাস ফসল চাষে পরামর্শ প্রদান করেন উপজেলার খর্নিয়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন। কৃষক নবদ্বীপ মল্লিক জানান, শুধু আমি নই, এলাকার অন্যান্য চাষিও বারোমাস ফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলার টিপনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক শেখ মনির, আবুল হাসেন, আব্দুল গনি গাজী, ফরাদ সরদার, ওসমান মোল্লা জানান, জমিতে লালশাকের চাষাবাদ করে বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যাচ্ছে। বাজারে লালশাকের চাহিদা রয়েছে। এর চাষাবাদে তেমন একটা সার প্রয়োগ করতে হয় না। তবে জমি প্রস্তুতের সময় শুকনো গোবর দিলে লালশাকের ফলন অধিক হয়। তারা শুধু লালশাক নয়, অন্যান্য শাকসবজিও চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া জেলার স্থানে স্থানেও কৃষক লালশাকের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়ার টিপনা কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন আমাদের প্রতিনিধি শেখ মাহতাব হোসেন কে বলেন, লালশাক চাষে তেমন একটা শ্রম দিতে হয় না।
জমি প্রস্তুত করে বীজ রোপণ করার ৩০ দিনের মাথায় লালশাক বিক্রি করা যায়। তেমন সারও দিতে হয় না। তবে অধিক বৃষ্টিতে লালশাক চাষে বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া কোনো কারণ নেই। সহজ বলেই স্থানে স্থানে কৃষক লালশাকের চাষ করছেন। লাভবানও হচ্ছেন। তার প্রমাণ কৃষক আবু হানিফ মোড়ল, তিনি ৩৩শতক জমিতে লালশাকের বীজ রোপণ করেন। লালশাক বিক্রি করেছেন। মেটে আলু গাছ কিছুটা বড় হয়েছে। অল্পদিনের মধ্যে অন্যান্য ফসল উৎপাদন শুরু হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, লালশাক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর, তাই ছোট-বড় সবাই এটা খুব পছন্দ করে। এর চাহিদা সবার কাছেই আছে। তাই লালশাক চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি অতিরিক্ত উৎপাদন করে ও বাজারে বিক্রির পর বাড়তি আয় করাও সম্ভব।
খুলনা জেলা অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন ১৮অক্টোবর দুপুরে আবু হানিফ মোড়লের লাল শাকের ক্ষেত পরিদর্শন করেন, খুলনা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, লালশাকের অনেক জাত রয়েছে। তবে লাল ও সবুজ শাক নামেই পরিচিত। সবচেয়ে বড় বিষয় মাত্র ২৫ থেকে ৩০ দিনের মাথায় এ শাক বিক্রি করা যায়। জমি তৈরি বাদে বছরে ৮ বার এ শাক চাষ করা সম্ভব।