শেখ মাহতাব হোসেন :: খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ ডুমুরিয়ায় পল্লী চিকিৎসকদের রিফ্রেসার্স ট্রেনিং করাতে একটি বেসরকারি লিঃ ফার্মের বিল প্রস্তুতকারী হয়েছেন। ওই ট্রেনিং না করলে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি স্বরূপ একটি লিফলেট বিলি করা হয়েছে। এদিকে নামকাওয়াস্তে ট্রেনিং এর দু’সপ্তাহ পার হলেও ৬০ জন প্রশিক্ষনার্থীকে কোন সনদ দেয়া হয়নি। আয়োজককারী সংস্থাটির কথিত কর্মকতাও লাপাত্তা। দোকানঘরটিও বন্ধ।
সিভিল সার্জন অফিস সুত্রে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ৬০ জন গ্রাম ডাক্তারের রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণের জন্য জনপ্রতি নেওয়া হয় সাড়ে ৭ হাজার টাকা। ২১ কর্ম দিবস প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিধান থাকলেও গত ২৩ জানুয়ারি (৯ দিন) প্রশিক্ষনের সমাপ্তি হয়। বাংলাদেশ প্রাথমিক চিকিৎসক ইনস্টিটিউট মেডিকেল সার্ভিসেস লিঃ নামে একটি বেসনরকারি সংগঠন ওই প্রশিক্ষনের আয়োজনকারী সংস্থা। ওই সংগঠনের প্যাডে জন প্রতি ৫ হাজার টাকা খরচ হবে প্রশিক্ষণ করতে এমন একটি বিল প্রস্তুত করা হয়েছে। বেসরকারি ওই সংগঠনের করা (বাজেট বেকাপ) এ বিল প্রস্তুতকারী হিসেবে খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ স্বাক্ষর করেছেন ও সিল মেরেছেন। যদিও তিনি এখন বলছেন ওই বিলে তিনি স্বাক্ষর করেননি তবে ওই সংগঠনের জেলা প্রশিক্ষন প্রতিনিধি দাবি কারী আব্দুল কাইয়ুম বলেছেন, ওই স্বাক্ষর সিভিল সার্জনের।
এদিকে প্রশিক্ষণের আগে ডুমুরিযায় একটি লিফলেট বিতরণ করা হয়। ওই লিফলেটে উল্লেখ করা হয়েছে সরকার অনুমোদিত খুলনা সিভিল সার্জন এর তত্ত্বাবধানে মাসব্যাপি গ্রাম ডাক্তার আর টি সি রিফ্রেসার্স ট্রেনিং এ ভর্তি চলছে। ওই লিফলেটে উল্লেখ করা হয়েছে যে সকল গ্রাম ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট, আর এম পি, ডি এম এস, ডি এম এ, প্যারামেডিক, ডিপ্লোমা, হোমিও চিকিৎসক, ডেন্টিস, এল এম এ এফ ( পল্লি চিকিৎসক, ফার্মেসী ব্যবসায়ী, ক্লিনিক ব্যবসায়ী, এবং চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিগণ সরকারি উক্ত প্রশিক্ষন গ্রহন করেন নাই, তারা অনতিবিলম্বে ভর্তির জন্য নিবন্ধন করুন, নতুবা কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। যে কারণে বাধ্য হয়েছে অনেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা দিয়েএ প্রশিক্ষনের জন্য ভর্তি হয়।
এ হুমকি স্বরূপ লিফলেট কেন দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে’র কর্মকর্তা ডাঃ সুফিয়ান সবকিছু জানে।
এদিকে প্রশিক্ষণ নেওয়া ৬০ পল্লী চিকিৎসককে গেল দু’সপ্তাহ ধরে কোন সনদ নেয়া হয়নি। এমনকি ওই আয়োজককারী সংস্থার কোন সদস্যও ডুমুরিয়ায় আসছেন না। ডুমুরিয়ার কালীবাড়ি মোড়ে ওই সংগঠনের একটি দোকান ভাড়া নেওয়া হলেও গত দু’সপ্তাহ ধরে সেটি বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে সংস্থাটির খুলনা জেলা প্রশিক্ষন প্রতিনিধি দাবি কারী আব্দুল কাইয়ুমের ব্যবহৃত ০১৭১৩৫–১৮৯ নম্বর মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুফিয়ান রুস্তম বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের চিঠির আলোকে আমি হাসপাতাল ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছি। এ সম্পর্কে আমি আর কিছু জানি না।