সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচি আসছে জানিয়ে চূড়ান্ত সেই লড়াইয়ে বিজয় অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রস্ততি নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
শনিবার খুলনায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন তিনি। বিকেলে মহানগরীর আড়ংঘাটা ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত পদযাত্রা বাইপাস রোড মৎস্য চাতাল এলাকায় পথসভার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডাল, তেল, আটা সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, সার ও ডিজেল সহ কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সহ ১০ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনার বিভিন্ন ইউনিয়নে এই কর্মসূচী পালিত হয়।
ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মতলেবুর রহমান মিতুলের সভাপতিত্বে পথসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু।
এরআগে দুপুরে আটরা-গিলাতলা ইউনিয়ন বিএনপি ও পরে যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে পৃথক পৃথক দুই পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শিরোমনি বাজার থেকে এক বিশাল পদযাত্রা শুরু হয়ে যশোর-খুলনা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রদক্ষিণ করে। প্রায় তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ফুলবাড়িগেট বাসস্ট্যান্ড হয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় কুয়েট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
বিএনপি এবং তার সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এ বিশাল পদযাত্রা থেকে সরকারের অনিয়ম দুর্নীতি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি সম্বলিত নানা প্লাকার্ড বহন করা হয়। একই সাথে দলীয় কর্মীরা রাস্তার আশেপাশের দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এবং রাস্তায় চলাচলরত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের মাঝে গণদাবির সমর্থনে অজ¯্র লিফলেট বিতরণ করেন। রাস্তার দুপাশে অবস্থানরত অনেকেই করতালির মাধ্যমে পথযাত্রাকে স্বাগত জানায়।
কুয়েট গেটে অনুষ্ঠিত পথসভায় মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, সরকারের লুটপাটের কারণে বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। জণজীবনে নাভিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ মুক্তির জন্য ছটফট করছে। সরকার প্রতিহিংসার শিকার হয়ে দেশনেত্রীকে কারাগারে পাঠিয়েছে। খুব শিগগিরই দু:শাসনের অবসান ঘটবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন শেখ আব্দুস সালাম ও যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস।
পদযাত্রা কর্মসূচীতে বিএনপির যুগ্ম আহবায়কদের মধ্যে স ম আব্দুর রহমান, এস এ রহমান বাবুল, কাজী মাহমুদ আলী, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, শেখ সাদী, সদস্য বেগ তানভিরুল আযম, রোবায়েত হোসেন বাবু, মুরশিদ কামাল, কে এম হুমায়ুন কবির, কাজী মিজানুর রহমান, এহতেশামুল হক শাওন, শেখ ইমাম হোসেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বাবু, আলমগীর হোসেন, ফারুক হোসেন হিল্টন, মোঃ জাহিদুল হোসেন জাহিদ, মিজানুর রহমান মিলটন, শামসুল বারিক পান্না, আজিজা খানম এলিজা, অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা আমিন, শফিকুল ইসলাম শাহিন, কাজী নেহিবুল হাসান নেহিম, আব্দুল আজিজ সুমন, মুনতাসির আল মামুন,
মোঃ ইমদাদুল হক, শেখ হাসিবুল হাসান, সরদার ফজলুর রহমান, আবু বক্কার শিকদার, সরদার নজরুল ইসলাম, ফকির রবিউল ইসলাম, মিনা মুরাদ হোসেন, মোঃ জাহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন খোকা, শেখ সেলিম আহম্মেদ, শেখ রফিকুল ইসলাম মাষ্টার, সৈয়দ হাফিজুর রহমান সাফি, সরদার মোস্তাক আহমেদ, শহিদুল ইসলাম সোহেল, শরিফ ওবায়দুর রহমান চয়ন, মোঃ ইলিয়াজ সরদার, মোঃ নুরুল ইসলাম নুরু, শেখ আসলাম হোসেন, আঃ সামাদ মাষ্টার, মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, মোঃ বাচ্চু শেখ, মোল্লা শরিফুল ইসলাম, মোঃ হাদিউজ্জামান, গোলাম ছরোয়ার, কামরুজ্জামান আলী, মোঃ সিরাজ শিকদার, শেখ আলমগীর হোসেন, মোঃ আবুল কালাম, আল মামুন জুয়েল, মোঃ বিল্লাল হোসেন, মোঃ মাসুম বিল্লাহ, আল আমিন হাওলাদার, মোঃ মিজান, শেখ শাহাজান, শেখ ইকরাম হোসেন, শেখ শাহেদ আহম্মেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে সংশ্লিষ্ট তিন ইউনিয়নে পুলিশী তৎপরতা ছিল ব্যাপক। পদযাত্রা শুরুর ও সমাপ্ত হওয়ার নির্ধারিত পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের সতর্ক উপস্থিতি দেখা যায়। আড়ংঘাটায় শাসক দলের স্থানীয় এক নেতার নেতৃত্বে তার অনুসারিরা সকাল থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় অবস্থান গ্রহণ করে। তাদের অতিউৎসাহী তৎপরতা জনমনে ভীতির সঞ্চার করে।