আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি বছর খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ঝড় বৃষ্টির না হওয়ায় আমের গুটি ঝড়ে পড়েনি। ফলে স্থানীয় বাগান মালিক ও চাষিরা অধিক ফলনে আশা করছেন। এছাড়াও জেলায় আশানুরূপ ফলন পাওয়া গেলে প্রায় কোটি টাকার আম বিক্রি হবে বলে কৃষি বিভাগের ধারনা।
জানা যায়, খুলনা জেলার সদর উপজেলা, ডুমুরিয়া উপজেলায় আমের ব্যাপক চাষ করা হয়েছে। এই উপজেলার বাগানগুলোর গাছে প্রচুর পরিমানে আমের গুটি এসেছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক কোনো দূর্যোগের কবলে না পরায় গুটিগুলো ঝড়ে পড়েনি। এই জেলার মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকে বলে গত কয়েকবছর যাবত হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, মল্লিকা, গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই ও গোপালখাসসহ অন্যান্য জাতের আমের চাষ করা হচ্ছে। এছাড়াও এখানকার উৎপাদিত আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ইংল্যান্ড ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি করা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, চলতি বছর ডুমুরিয়া উপজেলার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ করা হয়েছে। এতে এবছর ৩ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। চলতি বছরে কোটি টাকারও বেশি আয় হবে ।
সাহস ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মাষ্টার নজরুল ইসলাম বলেন, এখানকার আমের চাহিদা পুরো দেশ জুড়ে রয়েছে। বিশেষ করে এখানকার হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালি বিখ্যাত। আমি গত বছর আমার বাগান প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে লোকসান গুনতে হয়েছে। এবছর বাগান এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে আশা করি লাভবান হতে পারবো।
এলাকার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত বছর আবহাওয়া খারাপ থাকায় ফলন কম পেয়েছি। ফলে লোকসান গুনতে হয়েছে। এবছর বেশ ভালো ফলন হয়েছে। বাগান পরিচর্যা, পোকামাকড় মুক্ত করতে ওষুধ প্রয়োগ, ফলনের পর বাজারজাত, শ্রমিকের খরচ সব মিলিয়ে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। ফলন ভালো না পেলে খরচ বাদ দিয়ে লাভ করা সম্ভব হয় না। আশা করঢ়িছ এবছর লাভবান হতে পারবো।
খুলনা বড় বাজারের আড়তদার মতিয়ার রহমান বলেন, চলতি বছর এই জেলায় আমের বেশ ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে প্রতি মণ কাঁচা আম ১৪০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকাররা গ্রামের চাষিদের কাছ থেকে কম দামে কাঁচা আম কিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন।
তিনি আরো বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর বেশি দামে আম বিক্রি হবে।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমান বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় গাছের মুকুল ঝড়ে পড়েনি। ফলে গাছে প্রচুর পরিমানে আম ধরেছে। এবছর উপজেলায় ৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সামনে কোনো দূর্যোগ দেখা না দিলে উৎপাদনে রেকর্ড হবে। এখানকার উৎপাদিত আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ইতালি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, জার্মানি ও ইংল্যান্ডের শপগুলোতে রপ্তানি করা হবে। আর এই উৎপাদনে প্রতি কেজি আমের দাম ৫০ টাকা দর ধরলে প্রায় কোটি টাকার আম বিক্রি হবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে।