আগে কাজ করতাম মানুষের বাড়ি বাড়ি। গোপালগঞ্জ যেতাম ধান কাটতে। অনেক পরিশ্রম করতে হত। কৃষি অফিস ও এনজিও থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে কৃষি কাজ শুরু করি। জমিতে ফসল ফলিয়ে আগের চেয়ে ভালো আছি। পরিশ্রমও অনেক কম করতে হয়। এখন সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারছি।
এমনটাই বলছিল দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের চরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সুভাষ রায়। তিনি এক সময় মানুষের বাড়ি বাড়ি লেবারের কাজ করতেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে নিজের ২০শতক জমিতে শুরু করেন কৃষি কাজ। তার পর থেকে তাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি তার জমির আইলে লাগিয়েছেন বর্ষাকালীন সবজি। এতেই খুলে গেছে তার ভাগ্যের চাকা। স্ত্রী সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছেন তার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক সুভাষ রায় তার জমিতে উস্তে,করল্যা,শসা,বরবুটি ও বর্ষাকালীন তরমুজ লাগিয়েছেন। যার ফলন খুবই ভালো। তিনি নিজের বাড়ির চাহিদা মিটিয়ে সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রিয় করেন। তিনি প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩হাজার টাকার সবজি বিক্রয় করেন। এছাড়া তার ক্ষেতে বর্ষাকালীন তরমুজের ফলন অনেক ভালো। যা ৫০-৬০ হাজার টাকায় বিক্রয় হবে। সব মিলিয়ে খরচ খরচা ও পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে এই সিজিনে একলক্ষ টাকা আয় হবে তার।
শুধু সুভাষ রায় নন তাকে দেখে তার প্রতিবেশী গৌতম রায়, অসীম মন্ডল, উজ্জল রায় সহ অনেকে কৃষি কাজ করে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা এনেছেন বলে জানা গেছে। কথা হয় সুভষ রায় এর সাথে তিনি বলেন, আমি আগে লেবারের কাজ করতাম। কৃষি অফিসারের পরামর্শ মত আমার ২০শতক জমিতে সবজি চাষ শুরু করি। এখন আমার জমিতে উচতে, করোল্লা, বরবুটি, শসা ও তরমুজ চাষ করেছি। এখানে আমি জৈব সার ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিশ মুক্ত সবজি উৎপাদন করছি। সবজির দাম মোটা মুটি ভালো। পরিবার পরিজন নিয়ে আগের থেকে অনেক ভালো আছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, দাকোপে আগে জমিতে একটি মাত্র ফসল চাষ করা হত। তা হল আমন ধান। কিন্তু বর্তমানে এখান কৃষকরা ধান চাষের পাশা পাশি সবজি চাষ করছে। কেউ কেউ তরমুজ চাষ করছে। এতে তাদের অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে।
তাদের উৎপাদিত সবজি উপজেলার চাহিদা মিঠিয়ে জেলা শহরেও বিক্রি হচ্ছে। আমাদের কৃষি অফিসারেরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে। যারা উন্নতি করছে তাদের দেখে এলাকার অন্যরাও আগ্রহ দেখাচ্ছে এই কৃষি কজে আসার জন্য।