খুলনার পরিবেশবাদী সংগঠনসমুহের মুজগুন্নী- সোনাডাঙ্গা মহসড়কের সড়ক বিভাজকের ছোট, মাঝারি ও বড় গাছ কেটে ফেলবার প্রতিবাদে এবং সেই স্থানে দেশীয় গাছের চারা রোপনসহ অবশিষ্ট সড়ক বিভাজকের গাছ রেখেই সৌন্দর্যবর্ধনের কর্মসূচি গ্রহণের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) খুলনা প্রেস ক্লাবে খুলনার পরিবেশবাদী সংগঠনসমুহের মুজগুন্নী- সোনাডাঙ্গা মহসড়কের সড়ক বিভাজকের ছোট, মাঝারি ও বড় গাছ কেটে ফেলবার প্রতিবাদে এবং সেই স্থানে দেশীয় গাছের চারা রোপনসহ অবশিষ্ট সড়ক বিভাজকের গাছ রেখেই সৌন্দর্যবর্ধনের কর্মসূচি গ্রহণের দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেলা, খুলনার বিবাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, যে সময়ে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত পরিবেশ সুরক্ষায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা পেতে গাছ লাগানোর কথা বলছে ঠিক সেই মূহুর্তে এমন একটি সংবাদে খুলনার পরিবেশবাদী ও মানবতাবাদীরা রীতিমত শংকিত এবং উদ্বিগ্ন।
বক্তব্যে বলা হয়, এই খুলনা নগর আমাদের নগর, এখানকার গাছ ও সবুজ বলয় সুরক্ষার দায়িত্ব ও সিদ্ধান্ত আমাদের। সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীর প্রতিষ্ঠান। গাছ-পাখী-মানুষ এই নগরের সকলের অধিকার ও নিরাপত্তাকে গুরুত্ব ও সম্মান দিয়ে সিটি কর্পোরেশনকে সকলের আস্থা অর্জন করতে হবে। বক্তব্যে আরো বলা হয়, গাছ ও প্রকৃতি সুরক্ষায় সংবিধানের অঙ্গীকার, সংশ্লিষ্ট আইন এবং নগরবাসীর দাবি সবকিছুকে সমন্বয় করে এবং মেনে নিয়ে আমাদের এগোতে হবে। দিনে দিনে উত্তপ্ত হতে থাকা এই নগরে নির্মমভাবে গাছ কেটে আমাদের সকলের পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও জীবন
ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ জরুরী।
লিথিত বক্তব্যে পরিবেশবাদীদের পক্ষে ৮ দফা দাবি উত্থাপিত হয়। সেগুলো হলো মুজগুন্নী মহাসড়কের সড়ক বিভাজকসহ খুলনার পাবলিক পরিসরে উন্নয়নের নামে যখন তখন গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে, সড়কসহ সড়ক বিভাজকের গাছ কাটা বন্ধ করে কাটা গাছের স্থানে বৈচিত্রময় দেশীয় প্রজাতির গাছের চারা লাগাতে হবে, মুজগুন্নী মহাসড়কের সড়ক বিভাজকের কর্তনকৃত এলাকায় বৈচিত্রময় দেশীয় গাছ লাগানোর পাশাপাশি বাকি সড়ক বিভাজকে যে গাছ আছে তা রেখেই সৌন্দর্য বর্ধনের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে, যে সকল গাছ আমাদের দেশকে উপস্থাপন করে, আমাদের ঐতিহ্যকে উপস্থাপন করে, সেই জাতীয় গাছকে গুরুত্ব দিতে হবে, গাছের ডাল ভেঙে দূর্ঘটনা ঘটবে বা বড় গাছের জন্য ডিভাইডার ভেঙে যাবে এই সকল অজুহাতকে বর্জন করে পাখীদের আবাসস্থল তৈরীতে এবং পথচারীদের ছায়া সুনিবিড় পথ উপহার দিতে দেশীয় বড় গাছ লাগাতে হবে, গাছ কেটে সৌন্দর্যবর্ধন এমন বিপরীতমুখী কর্মকান্ড বন্ধ করতে হবে, জনগণের করের টাকায় একবার গাছ লাগানো এবং আরেকবার গাছ কেটে আবার গাছ লাগানোর নতুন প্রকল্প গ্রহণের নামে অর্থ আত্মসাতের গাছ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে, নগর উন্নয়নে প্রকৃতিভিত্তিক পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিয়ে বৃক্ষ ও নগরবাসীবান্ধব সৃনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে নগরের সকল শ্রেণী-পেশা-জাতি-বর্ণের মানুষ নগরের বৃক্ষ ও সবুজ বলয় সুরক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সনাক, খুলনার সভাপতি ও পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের সভাডতি এ্যাড. কুদরত-ই-খুদা, পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক সুতপা বেদজ্ঞ, বোপা, খুলনার সমন্বয়কারী এ্যাড. বাবুল হাওলাদার, টিআইবি’র এলাকা সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিবর্তন- খুলনার নির্বাহী পরিচালক নাজমুল আযম ডেবিড, হিউম্যানিটি ওয়াচের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সেলিম, আইআরভি’র নির্বাহী পরিচালক মেরিনা যুথী, নিজেরা করি’র প্রতিনিধি নাসিমা খাতুন, ছায়াবৃক্ষের প্রধান নির্বাহী মাহবুব আলম বাদশা প্রমূখ।