খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর উদ্যোগে সোমবার ২ (অক্টোবর) ‘কমপ্ল্যায়েন্স উইথ ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন: আপডেটস্ এন্ড চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯.১৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, ট্যাক্স প্রদান অনেক পুরনো একটি প্রক্রিয়া। সভ্যতার শুরু থেকে ট্যাক্স দেওয়ার প্রচলন ছিল। বিশেষ করে কৃষকদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সেই সময় ট্যাক্স আদায় হতো। আধুনিক বিশ্বেও ট্যাক্সের প্রচলন রয়েছে। সরকার তার নিজস্ব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করে। মানুষ মূলত সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের কারণে ট্যাক্স প্রদান করে। তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্বে ট্যাক্স দেওয়ার হার অনেক বেশি। যার কারণে সেসব দেশে উন্নয়নের হারও অনেক বেশি। আমাদের দেশেও প্রতিবছর ট্যাক্স দেওয়ার হার বাড়ছে। মনে রাখতে হবে- ট্যাক্সের অর্থে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। আমরা যদি যথাযথভাবে ট্যাক্স প্রদান করি তাহলে দেশ অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে।
উপাচার্য বলেন, ট্যাক্স দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে সচেতনতার অভাব রয়েছে। বিশেষ করে কীভাবে ট্যাক্স দেবো, কত শতাংশ ট্যাক্স ধার্য হয়েছে এসব বিষয়ে মানুষের সচেতনতার ঘাটতি দেখা যায়। যার কারণে করদাতারা রিটার্ন দেওয়ার ক্ষেত্রে অসাধু উপায় বা মাধ্যমে জড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়গুলো পরিহার করা উচিত। উপাচার্য এক্ষেত্রে নিজেদের রিটার্ন নিজেরাই দেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি ট্যাক্স অফিসগুলো পরামর্শ সেল চালু ও অনলাইনে রিটার্ন দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করার আহ্বান জানান। যাতে সমস্যার সম্মুখীন হলে করদাতারা সরকারি আইনি পরামর্শ পেতে পারেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অর্থের প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো তৈরিতেও অর্থের প্রয়োজন। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ যে গড়ার স্বপ্নে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি তা পূরণে সবাইকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ট্যাক্স প্রদান করা উচিত। তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরিজীবীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ট্যাক্সের আওতায় রয়েছে, কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ের যেসব জনগোষ্ঠীর আয় করসীমা অতিক্রম করেছে তাদেরকে ট্যাক্সের আওতায় আনা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তিনি সংশ্লিষ্ট মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মতিউল ইসলাম। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজ ও খুলনার কর কমিশনার মো. সিরাজুল করিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইকিউএসির উপ-রেজিস্ট্রার মো. নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দিনব্যাপী ৩টি সেশনে রিসোর্স পারসন হিসেবে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা করেন খুলনার কর কমিশনার মো. সিরাজুল করিম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. গাজী সিরাজুল ইসলাম ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মো. মোস্তফা কামাল। প্রশিক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।