স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিকাশ ও তরুণদের উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীন ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’ প্রকল্পের (ডিড) আওতায় ‘স্মার্ট ইউনিবেটর’ শীর্ষক এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আগামীকাল ১৮ অক্টোবর (বুধবার) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের চতুর্থ তলায় ইনোভেশন হাবের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।
পরে একই স্থানে দ্বিতীয় অংশের অনুষ্ঠানে ইনোভেশন হাবের নামফলক উন্মোচন করবেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এসময় এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বক্তব্য রাখবেন। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এবং ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। আরও বক্তব্য রাখবেন ইনোভেশন হাবের ফোকাল পারসন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. রামেশ্বর দেবনাথ। প্রকল্পের পরিচিতিসহ হাবের সার্বিক উদ্দেশ্য তুলে ধরবেন উক্ত প্রকল্পের ট্রেনিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট স্বাতী শারমিন। সম্ভাবনাময়ী উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন স্টার্টআপ খুলনার প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মেহেদী হাসান। সভাপতিত্ব করবেন বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. কামরুল হাসান তালুকদার।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপনের লক্ষ্যে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জি এস এম জাফরুল্লাহ এনডিসি। পরে তিনি উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এসময় তিনি ইনোভেশন হাব স্থাপনের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এ ইনোভেশন হাবের মাধ্যমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ অত্র অঞ্চলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেন ভবিষ্যতে সফলতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে বা উদ্যোক্তা হয়ে নিজে বড় কোম্পানি তৈরি করতে পারে সে জন্য নানা প্রকারের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে নতুন নতুন আইডিয়া গ্রহণ করে সমাজের কাজে লাগে এমন পণ্য/সেবা তৈরির সম্ভাবনাময় আইডিয়াগুলো বাছাই করে সে আইডিয়া হতে জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। স্টার্টআপ তৈরির এ কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যুক্ত থাকবেন। উল্লেখ্য, ইনোভেশন হাবের স্টার্টআপগণ হবেন মূলত প্রি সিড বা সিড পর্যায়ের। এ স্টার্টআপগণ যাতে কিছু ফান্ডিং সুবিধা পেতে পারেন সেজন্যও কাজ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩০০০ জনকে স্টার্টআপ হতে আগ্রহী করার জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
প্রশিক্ষণ ছাড়াও ইনোভেশন হাবে থ্রিডি প্রিন্টার, ড্রোন তৈরির যন্ত্রপাতি, এআই নিয়ে কাজ করার জন্য কিছু ইকুইপমেন্ট ও সফটওয়ার প্রদান করা হবে। ছাত্রছাত্রীগণ এ সকল ইকুইপমেন্ট ও সফটওয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে এ সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান আহরণ করতে পারবে এবং উক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারবে। আরো উল্লেখ, স্টার্টআপগণ ইনোভেশন হারকে তাদের অফিস বা ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ স্টার্টআপ কোম্পানির সাথে জড়িত থাকলে তিনিও স্টার্টআপের সফলতার অংশীদার হবেন।