খুলনায় চাঞ্চল্যকর হাবিব শেখ (৩২) হত্যার মামলার দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে র্যাব-৬ খুলনা কার্যালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বটিয়াঘাটার এসকেন্দার ফকিরের ছেলে, সোহেল ফকির (২৭) ও রুবেল ফকির (৩৫)। গত ২৭ নভেম্বর রাত ৯ টায় র্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বটিয়াঘাটার কবির মোল্লার ইট ভাটা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভিকটিম হাবিব শেখ (৩২) নজরুল ইসলামের ড্রেজার মেশিনের কর্মচারী হিসেবে ২ বছর ধরে চাকুরী করতো। পূর্ব বিরোধের জের ধরে চলতি বছরের ৬ অক্টোবর রাত ১টার দিকে আসামী মোঃ নজরুল ইসলাম তার কর্মচারী হাবিব শেখকে ড্রেজার মেশিন দেখানোর কথা বলে বটিয়াঘাটার কাতিয়ানাংলা বাজার সংলগ্ন নদীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তারা দেবতলা পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা আসামীরা পূর্ব পরিকল্পনামতে হাবিব শেখকে জোরপূর্বক বটিয়াঘাটা থানাধীন দেবতলা গ্রামের বাবুল গাজীর মুদি ও চায়ের দোকানের পিছনে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে আটকে রেখে হাত পা বেঁধে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে। আসামীরা ড্রিল মেশিন দিয়ে ভিকটিমের দুই পায়ের হাটুর নিচে ছিদ্র করে এবং লজ্জা স্থানে পিন দিয়ে ক্ষতের সৃষ্টি করে। ভিকটিম অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এই সংবাদ পেয়ে স্থানীয় ইপি সদস্য হেমন্ত ও গ্রাম পুলিশ প্রবির ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আসামীরা ৩নং আসামী সোহেল ফকিরের ভ্যান চুরি এবং এলাকার অন্যান্য লোকের ভ্যান চুরির মিথ্যা নাটক সাজিয়ে অপবাদ দেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হেমন্ত কোন উপায় না পেয়ে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল হতে গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাবিবকে উদ্ধার করে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। আসামীদের পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসাবে সোহেল ফকির বটিয়াঘাটা থানায় ভ্যান চুরির মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
ওই মামলার আসামী হিসেবে ভিকটিম হাবিব শেখকে আদালতে সোপর্দ করা হলে জেল হাজতে প্রেরণ করে। কারাগারে থাকা অবস্থায় আসামীদের মারধরের কারণে ঘটনার দুই দিন পর ৮ অক্টোবর হাবিব শেখ অসুস্থ হলে কারা কর্তৃপক্ষ খুলনা মেডিরেল কলেজ হাসাপাতালে প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। সে ১১ অক্টোবর ভ্যান চুরির মামলায় আদালতের মাধ্যমে জামিন পায়।
পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন একই দিন হাসপাতালের ১১ ও ১২ নং সার্জারী ওয়ার্ডে চিকি’সার জন্য ভর্তি করে। পরবর্তীতে ১৪ অক্টোবর বিকাল ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম হাবিব শেখকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে বটিয়াঘাটা থানায় হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
গত ২৭ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে হাবিব শেখ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী সোহেল ফকির এবং রুবেল ফকিরকে রূপসার নৈইহাটি শ্রীরামপুর গ্রামের কবির মোল্লার ইট ভাটা থেকে গ্রেপ্তার করে।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।