ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে জলবায়ু ক্ষতিপুরণ আদায় করে ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যয় করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ কর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় নদ-নদী দখল-দূষণ ও ভরাটের কারণে ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। মানুষের জীবন-জীবিকা, সম্পদ, খাদ্য, পানি, বাস¯ানসহ অন্যান্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে মানুষের বাস্ত¯চ্যুতির সংখ্যা বাড়ছে। এই সংকট থেকে উত্তরণ কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল জনশূণ্য হয় পড়বে।
শনিবার সকালে খুলনার পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদের পাড়ে আয়োজিত শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, মানববন্ধন ও সমাবেশ এ সব কথা বলেন তারা। বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে‘গ্লোবাল এ্যাকশন ডে’ উপলক্ষে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, অনির্বাণ লাইব্রেরি এবং সচেতন সংস্থা যৌথ ভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আদালনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন অ্যাডভোকেট বিপ্লব কান্তি মন্ডল, মুক্তিযোদ্ধা শেখ দিদার হোসেন, অধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ বাহার, উপাধ্যক্ষ ত্রিদিব মন্ডল, অধ্যাপক রেজাউল করিম খোকন, প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার শম্পা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, মানবাধিকার কর্মী এস এম মোস্তাফিজুর রহমান পারভেজ, অনির্বাণ লাইব্ররির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত দবনাথ, ইউপি সদস্য বিষ্ণুপদ রায়, পাইকগাছা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আব্দুল আজিজ, যুবনেতা প্রদীপ দত্ত, সচতন সং¯ার সভাপতি বিদ্যুৎ বিশ্বাস, সাংবাদিক পলাশ কর্মকার, নদী কর্মী আলাউদ্দিন মোড়ল।
সমাবেশে বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবলায় দ্রুত পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জলবায়ু ও জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় গ্যাস ও এলএনজি ব্যবহার বাড়ানো কোন সমাধান নয়, বরং সবুজায়ন-নবায়নযোগ্য জ্বালানিই ভবিষ্যৎ। তাই গ্যাস ও এলএনজিতে অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে। কয়লাসহ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বাড়াতে হবে। শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, অবিলম্বে জলবায়ু পরিবর্তনর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
বক্তারা উপকূলের সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, মৃতপ্রায় শিবসা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ (জোয়ার-ভাটা) নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এক সময়ের খরস্রোতা শিবসা নদী এখন অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। যে কারণে শিবসা পাড়ের মানুষ জীবিকা হারাচ্ছে। শিবসার পানিতে প্লাবিত হয়ে পাইকগাছা পৌর শহরসহ আশাপাশের এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে। তাই শিবসা নদী খননে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। কপোতাক্ষ নদের খনন কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান তারা।
এদিকে অনির্বাণ লাইব্ররিতে আয়োজিত চিত্রাংকন প্রতিযাগিতা শেষে অংশগ্রহণকারিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গণেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য্য, সন্ধ্যা রানী হালদার, শিক্ষক লতিকা রানী দাশ, অনির্বাণ লাইব্ররির সহ-সভাপতি মানিক ভদ্র, পরিবেশ কর্মী রাজীব গাঙ্গুলী।