মো: ইমদাদুল হক:: আসন্ন ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসন থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দেন ১২ জন প্রার্থী। যার মধ্যে যাচাই-বাছায়ে বাদ পড়েন ৭ জন প্রার্থী। বহাল থাকা প্রার্থীদের মধ্যে ৩জন বাদে বাকি ৪ জন এমপি পদপ্রার্থীকে চেনেন না নির্বাচনী এলাকার ভোটাররা।
খুলনা এ আসন থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দেন ১২ জন, যাদের নাম মোঃ রশিদুজ্জামান মোড়ল- আওয়ামী লীগ, মোঃ শফিকুল ইসলাম মধু- জাতীয় পার্টি, মোঃ আবু সুফিয়ান- ন্যাশনাল পিপলস্পা র্টি, শেখ মর্তুজা আল মামুন-জাকের পার্টি, মির্জা গোলাম আজম- বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি, এস এম নেওয়াজ মোরশেদ -বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, নাদির উদ্দিন খান – তৃণমূল বিএনপি, জি এম মাহবুবুল আলম, মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, এস এম রাজু, মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান মোড়ল, গাজী মোস্তফা কামাল বন্দন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। যার মধ্যে মনোনয়ন পত্র বাতিল হয় ৭ জনের।
তারা হলেন মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, গাজী মোস্তফা কামাল বন্দন,, এস এম রাজু, জি এম মাহবুবুল আলম, মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, মর্তুজা আল মামুন, ও শফিকুল ইসলাম মধু। এদের মধ্যে আপীল করে বৈধ হয়ে ফিরে আসেন জি এম মাহবুবুল আলম, ও শফিকুল ইসলাম মধু। বৈধ হওয়া ৭ জনের মধ্যে ৩ জন ছাড়া রাজনীতিতে আর কারোর তেমন কোন পরিচিতি নেই নির্বাচনী এলাকায়। এই আসনের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ভোটারদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন সরকারি দল আ-লীগ ও তাদের জোট সঙ্গী জাতীয় পার্টি ব্যতীত অন্য নামসর্বস্ব বিভিন্ন দল থেকে এ আসনে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই এলাকার লোক জনের সাথে সম্পর্ক নেই। অনেকে নিজ এলাকায় ও থাকেন না। এজন্য নির্বাচনী এলাকার সাধারণ মানুষজন তাদের চেনেন না। ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার নির্বাচনী অংশ নেওয়া এই ৭ জনের মধ্যে ৩ জনের নাম ছাড়া বাকী সবাই নতুন শুনছেন।এমনকি রাজনীতির মাঠে এর আগে তাদের দেখা যায় নি। তাদের দল কিংবা নেতাকর্মীদের কোন কার্যক্রম কখনোই চোখে পড়েনি। রাজনীতিতে তারা অপরিচিত মুখ। উপজেলা পর্যায়ে তাদের দলের কোন কমিটির ও খোঁজ পাওয়া যায়নি। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু ইতিপূর্বে এ আসনে নির্বাচন করেছেন। নির্বাচন করে খুলনা চলে যায়, আর আসে না।
অন্যদিকে আ-লীগের মনোনীত প্রার্থী মোঃ রশিদুজ্জামান মোড়ল এর আগে উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের টানা দুই বার চেয়ারম্যান ছিলেন ও একবার পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি আগে কমিউনিস্ট পার্টির লোক ছিলেন ও লোনা পানি তুলে মৎস্য লিজ ঘের বিরোধী আন্দোলন করায় পাইকগাছা উপজেলার লোকজন তাকে ভালো চেনেন। অন্যদিকে জেলা আ-লীগের কোষাধক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ার জি এম মাহবুবুল আলম, যার বাড়ি কয়রা উপজেলায়। তিনি উভয় উপজেলার আওয়ামী লীগের লোক কম বেশি চেনে। নৌকার প্রতীক বা আ-লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
এ জন্য এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের সাথে আওয়ামী লীগের। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু, এখনো নির্বাচনী এলাকায় আসেননি এবং আসন ভাগাভাগিতে তিনি টিকে না থাকাই নির্বাচন থেকে সরে আছেন বলে জানা যায়। এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়া অন্য বাকি দল গুলোর মধ্যে বেশিরভাগ দলের কোন কমিটি বা অফিস নেই। অনেকের নামও ভোটাররা পূর্বে শোনেনি। হঠাৎ করে তারা এমপি নির্বাচনে আগ্রহী হলেন কেন? এমন প্রশ্ন করছেন অনেকেই। যার সঠিক উত্তর প্রার্থীরা দিতে পারছেন না।
এ আসনের ভোটাররা এর আগে ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি, তৃণমূল বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন নামের দলের কথা শোনেনি। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এলাকায় নেই। নির্বাচনের সময় এসব দলের নাম ও প্রার্থীদের নাম শোনা যায়। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একজন জানান, অনেকেই নিজেকে পরিচিত করতে নাম সর্বস্ব নিবন্ধন প্রাপ্ত দলের মনোনয়ন নেন মাত্র। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ পাইকগাছা শহরে বাড়ি হওয়ায় এলাকায় বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনের সাথে জড়িত থাকায় এলাকার মানুষ কম বেশি তাকে চেনে। তাই তাকে একেবারে ফেলে দেওয়া যাবে না। অনেকেই বলেন যারা এমপি প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকের নাম ও আমরা কখনো শুনিনি বা চিনিনা। শুধু আমরা নই গ্রাম এলাকার বেশিরভাগ সাধারণ মানুষের একই অবস্থা।