খুলনায় ইজিবাইক ছিনতাই করে চালক মো. আবুল কালাম আজাদকে (৫৬) হত্যার ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে কেএমপির সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানিয়েছেন। বুধবার ও মঙ্গলবার গোয়েন্দা তথ্য এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রুপসার সাহিল হোসেন মকবুলের ছেলে মনির হাওলাদার ওরফে মনির (৩২), খানজাহান আলী থানার আটরা পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল গনির ছেলে মো. রনি শেখ (৩৬), ফুলতলার মোহাম্মদ শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৮), ফুলতলা পয়গ্রামের আলমাস হোসেনের ছেলে ফোরকান হোসেন ওরফে তোহান (২৯), একই এলাকা লতিফ লস্করের ছেলে রিয়াদ লস্কর ওরফে রিয়াদ (২৩), আটরামিরপাড়া এলাকার আহসান আলীর মীরের ছেলে সৈয়দ মোহন হোসেন (৩৭), দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা সেনপাড়া এলাকার মোঃ আবুল কাসেমের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম (৩৮) ও মহেশ্বরপাশা জিয়া কলেজ রোডের মুন্সিপাড়া এলাকার মো. আব্দুল মজিদ কাজীর ছেলে মো. আল আমিন কাজী (৩৫)।
কেএমপি কমিশনার জানান, গত ৫ জানুয়ারি রাত ৯ টার দিকে খানজাহান আলী থানাধীন আটরা পশ্চিম পাড়া নতুন রেল লাইনের পূর্ব পাশে জনৈক সাইফুল ইসলামের সরিষা ক্ষেত হইতে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় খানজাহান আলী থানা পুলিশ অজ্ঞাত একটি মৃত দেহ উদ্ধার করে। অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে খানজাহান আলী থানা পুলিশ লাশটির সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি লোকমুখে শুনে রুপসা মাস্টারপাড়া এলাকা থেকে রাণী বেগম নামক একজন মহিলা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে অজ্ঞাতনামা লাশটি তার স্বামী মোঃ আবুল কালাম আজাদ (৫৬) বলে সনাক্ত করে।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী রাণী বেগম খানজাহান আলী থানায় এসে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে এজাহার দায়ের করলে বাদীর এজাহারের ভিত্তিতে গত ৮ জানুয়ারি অফিসার ইনচার্জ খানজাহান আলী থানার মামলা রুজু করে। পরবর্তীতে খানজাহান আলী থানার একটি চৌকস তদন্ত দলের নেতৃত্বে এই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ও পারিপার্শ্বিক পর্যালোচনায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়।
কেএমপি কমিশনার বলেন, মামলাটির তদন্তকালে জানা যায় মৃত. আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘদিন ধরেঅন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। পরবর্তীতে সে ইজিবাইকটি ভাড়া নিয়ে চালিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালাতো। সে অত্যন্ত দীনহীন হওয়ায় মানবিক দায়িত্ব বোধ থেকে আমারা পাশে দাঁড়াবো। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে সাধ্য অনুযায়ী মানবিক ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। সেই প্রেক্ষিতে কেএমপি’র পক্ষ থেকে আমরা নিহত ভিকটিমের স্ত্রী রাণী বেগমকে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য একটি সেলাই মেশিন ও নগদ অর্থ প্রদান করছি।
ভিকটিমের স্ত্রী রাণী বেগম এই হত্যা মামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকল আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ সময় কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস অ্যান্ড সাপ্লাই) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত এম এম শাকিলুজ্জামান, অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) সোনালী সেন, সহকারী পুলিশ কমিশনার (স্টাফ অফিসার টু পিসি) ইমদাদুল হক, সহকারী পুলিশ কমিশনার (দৌলতপুর জোন) মোঃ আবুল বাশার, খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ মমতাজুল হক এবং পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত পলাশ কুমার দাস উপস্থিত ছিলেন।