শেখ মাহতাব হোসেন:: খুলনার কৃষকরা বাণিজ্যিক ভাবে স্কোয়াশ চাষে ঝুঁকছেন। এ জেলার সবজি চাষে নতুন চাষ হিসেবে যুক্ত হয়েছে উত্তর আমেরিকার স্কোয়াশ। ফলন ভালো হওয়ায় সাড়া ফেলেছে ভোক্তা ও চাষিদের মধ্যে। খেতে সুস্বাদু আর অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষে ঝুঁকছেনকৃষকরা। গত কয়েক বছর পরীক্ষামূলক চাষের পর বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেছে বেশ কিছু কৃষক।
কৃষকরা বলছেন, চাহিদা ভালো আছে। তবে কৃষি বিভাগের তৎপরতা আরো বেশি হলে ব্যাপকহারে এই সুস্বাদু সবজিটি চাষ হবে বলে দাবি কৃষকদের। ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা গ্রামের মহিত নামের একজন কৃষক চাষ করেছেন স্কোয়াশ। চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, অক্টোবর মাসে এর বীজ বপন করা হয়। ফলন ধরা শুরু করলে মাস খানেক বা তারও বেশি সময় ধরে ফলন পাওয়া যায়। প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিনবার গাছ থেকে স্কোয়াশ বিক্রি করতে পারবেন। পানির ব্যবহার কমাত এবং আগাছা ও রোগবালাই থেকে গাছকে সুরক্ষা দিতে ব্যবহার করেছি মালচিং পেপার। কীটনাশকের পরিবর্তে ফেরোমন ট্যাপ ও ইয়োলো স্টিট ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে কীটনাশক মুক্ত সবজি উৎপাদন করে ভোক্তাপর্যায়ে পৌছে দেয়া যায়। উত্তর আমেরিকার এই সবজির পুষ্টিগুণও আছে প্রচুর।
এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ জান্নাতুননেছা জানান, স্কোয়াশে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, অন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ, বিটা ক্যারোটিন ও লুটেইন, ফোলেট কপার,রিবোফ্লাবিন, ফসফরাস, ক্যারোটিনয়েডস ও পটাশিয়ামের মতো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থসমূহ, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, অ্যাজমা, ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগ থেকে রক্ষা করে। ক্যান্সার প্রতিরোধে স্কোয়াশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দেহের ফ্রি র্যাডিকেলস দূর করে এবং বিটা ক্যারোটিন ক্যান্সারের ক্ষতিকর পদার্থ থেকে দূরে রাখে আমাদের।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, আমরা ডুমুরিয়া মাটিতে যেন বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি সবজি আবাদ করতে পারি সেজন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও নানা পরামর্শ দিয়ে আসছি। তারই ফল সরূপ আমরা স্কোয়াশ চাষটাও ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি। এতে খরচ কম ও লাভ বেশি। বাজারে চাহিদাও রয়েছে বেশ। ইতোমধ্যে বেশ কয়েক জায়গায় চাষটি বাণিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, স্কোয়াশ মূলত একটি শীতকালীন সবজি। এটি বিদেশি জনপ্রিয় সবজি। দেখতে বাঙ্গির মতো লম্বা ও সবুজ। মিষ্টি কুমড়ার মতো এক ধরণের সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। এটি সবুজ ও হলুদ দুই ধরনের রঙের হয়ে থাকে। বাংলাদেশে নতুনভাবে এটি চাষ শুরু হয়েছে। ভারতে চাষাবাদ হচ্ছে এরকম কয়েকটি জাতের – একটি জনপ্রিয় জাত। পুষ্টিগুণ ও ব্যবহারঃ স্কোয়াশে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ আছে। এর পাতা ও কাণ্ড সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। সামার স্কোয়াশ তরকারি ও ভাজি হিসেবে খাওয়া হয়ে থাকে।