পাইকগাছার আলোচিত গয়সা খাল ও পোদা নদী থেকে সরকার প্রতিবছর ২ লাখ টাকা রাজস্ব পাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে খালটির ৪ কিলোমিটার খনন করা হলেও অবশিষ্ঠ ৩ কিলোমিটার খনন না করায় খালের পুরোপুরি সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এদিকে খালটি ইজারা প্রদান করায় পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা কোন ভাবেই বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে না। পাশাপাশি খালটি সম্পূর্ণ খনন না করায় খননকৃত অংশের কোন সুফল কাজে আসছেনা বলে জানিয়েছেন ইজারাদার সোনার তরী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, উপজেলার নদী এবং খাল বেষ্টিত ইউনিয়নগুলোর মধ্যে লতা ইউনিয়ন অন্যতম। এ ইউনিয়নে অনেকগুলো নদ-নদী ও অসংখ্য সরকারি খাল থাকায় এ ইউনিয়নে তেমন কোন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়না। এ ইউনিয়নের অন্যতম জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সরকারি খাল ও বদ্ধনদী হচ্ছে গয়সা খাল ও পোদা নদী। এটি ইউনিয়নের গঙ্গারকোনা পিচে রাস্তা হতে ধলাই স্লুইচ গেট হতে নদীর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এ খালটির আয়তন প্রায় ৭৪ একর। দুটি ভাগে এটি ইজারা প্রদান করা হয়। গয়সা খালের অংশটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে এবং বদ্ধ পোদা নদীর অংশ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৩ বছর মেয়াদী ইজারা প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় সোনার তরী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির অনুকূলে ইজারা গ্রহণ করেছে সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সরকার গয়সা খাল ও পোদা নদী থেকে প্রতিবছর ২ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করছে। ইজারা চুক্তি অনুযায়ী এখনো গয়সা খালের মেয়াদ ২ বছর ও পোদা নদীর মেয়াদ ১ বছর রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে খালের গঙ্গারকোনা পিচের রাস্তা থেকে আঁধারমানিক ব্রিজ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে। স্থানীয় বিভিন্ন জটিলতার কারণে খালের অবশিষ্ট ৩ কিলোমিটার খনন কাজ বন্ধ রয়েছে। যার ফলে খননের পুরোপুরি সুফল পাচ্ছে না এলাকার মানুষ।
এ ব্যাপারে সোনারতরী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ইকবাল হোসেন জানান, খালটি ইজারা প্রদান করায় আমরা প্রতিবছর সরকারকে ২ লাখ টাকা রাজস্ব এবং এর সাথে ৩০% অতিরিক্ত অর্থ সরকারি খাতে প্রদান করে থাকি।
সন্তোষ কুমার জানান, আমরা খালের কোথাও বাঁধ কিংবা পাটা দেয়নি। ইজারা চুক্তিতে পাটা দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা খালে জাল ব্যবহার করে থাকি। এর ফলে খালের কোথাও পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বাঁধাগ্রস্থ হয় না। কিছু কিছু জায়গায় ছোট খাটো বাঁধ থাকলেও সেটি পূর্বের ইজারাদারের দেওয়া। ইউপি চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাস জানান, খালের পুরোপুরি সুফল পেতে হলে খালটি সম্পূর্ণ খনন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন জানান, সরকারি জলমহল নীতিমালা অনুসরণ করেই খালটি ইজারা প্রদান করা হয়েছে। এটি ইজারা প্রদান করা হলেও জনস্বার্থ বিঘিত বা ব্যাহত যাতে না হয় সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে উল্লেখ করে খালের অবশিষ্ট অংশ খননের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাহী এ কর্মকর্তা জানান।