ঘূর্নিঝড় রেমাল মোকাবেলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষে শনিবার (২৫ মে) মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান এর সভাপতিত্বে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবেলার প্রস্তুতি বিষয়ক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড়, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস (ইপিজেড), এনএসআই, ডিজিএফআই প্রতিনিধিসহ মোংলা বন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন সরাসরি ও জুমের মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন। সভায় ঘূর্নিঝড় মোকাবেলায় নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানাযায়, বাণিজ্যিক সকল জাহাজসমূহকে জেটির পার্শ্ব ত্যাগ করে চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে নোঙ্গর করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। মোংলা বন্দরের নিজস্ব জলযানসমূহকে ২ টায়ারে বিদ্যমান বার্থসমূহে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্দরের জেটি এলাকার অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ও অন্যান্য কার্গোসমূহকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব হতে রক্ষা করতে সিঙ্গেল টায়ারে সুশৃঙ্খলভাবে সাজিয়ে বেধে রাখা হয়েছে। কার্গো হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্টগুলোকে ইকুইপমেন্ট ইয়ার্ডে সঠিকভাবে বেধে রাখা হয়েছে।
এছাড়া ঝড় থেমে না যাওয়া পর্যন্ত বন্দর ও বন্দর সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সকল ব্যক্তিবর্গ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন। স্থানীয় সতর্ক সংকেত ৪ নং এর পর থেকে মোংলা বন্দরের সকল প্রকার অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে। এই মূহুর্তে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়ায় ০৪ টি জাহাজ, বেসক্রিক এরিয়ায় ০১ টি ও জেটিতে ০২ টি জাহাজসহ মোট ০৬ টি বিদেশি জাহাজ রয়েছে।
বন্দরের আবাসিক এলাকাগুলোতে বসবাসরতদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জরুরি সেবার জন্য আলাদা আলাদা উপ-নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। বন্দরের অভ্যন্তরে অন্যান্য এলাকায় বসবাসরত সকল ব্যক্তিবর্গকে মোংলা বন্দরের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরের বিষয়ে সাইক্লোন সেন্টার (ধারণ ক্ষমতা ১০০০ জনের) হিসাবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তত করা হয়েছে।
এছাড়া ঝড়ের সময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মেডিকেল টিম ও নিরাপত্তা বিভাগ কর্তৃক রেসকিউ টিম গঠন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে কোন জাহাজ/জলযান মবক চ্যানেলে ক্ষতিগ্রস্থ/ডুবে গেলে তা দ্রুত অপসারণের জন্য কয়েকটি স্যালভেজ প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করা আছে। প্রয়োজনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের উদ্ধার জলযানের সহযোগিতা গ্রহণ করা হবে। ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন সময়ে মুরিং বয়ায় থাকা জলযানগুলিকে মবকের টাগ বোট সহযোগিতা করবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর জন্য প্রস্তুতি হিসেবে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও সংশ্লিষ্ট বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।
বন্দর চ্যানেলকে নিরাপদে রাখার জন্য দেশি কার্গো ও লাইটারেজ গুলোকে চ্যানেলের বাইরে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। বন্দরে আমদানিকৃত গাড়ি নিরাপদে রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ও আমদানিকারকগনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া বন্দর জেটিতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো নিরাপদ অবস্থানে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।