কোন রায়ের বিরুদ্ধে জনসম্মুখে বিরোধীতা বেআইনী : জেলা প্রশাসন
অনলাইন ডেস্কঃনগরীর টুটপাড়াস্থ ন্যাশনাল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও র্যাবের অভিযানের প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সাত রাস্তা মোড়স্থ বিএমএ ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশন (বিপিএইচসিডিওএ) খুলনা। এদিকে কোন রায়ের বিরুদ্ধে এভাবে জনসম্মুখে প্রচারণা বেআইনী বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ইউসুফ আলী বলেন, মাদক, ভেজাল খাদ্য দ্রব্য ও সমাজের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে জেল-জরিমানা করার পূর্বে অপরাধের বিষয়ে স্বীকারোক্তি নেন। কেউ যদি অপরাধ স্বীকার না করে সেক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানা না করে আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নিয়মিত মামলা রুজুর পরামর্শ দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে কেউ জনসম্মুখে বিরোধীতা করলে তা বেআইনী বলে গণ্য হবে। তাছাড়া গত ২৭ জুন খুলনার টুটপাড়াস্থ ন্যাশনাল হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় ওষুধ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, র্যাব ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে এই হাসপাতালের মালিক পক্ষ তাদের অব্যবস্থাপনার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের অপারেশন থিয়েটার থেকে অবৈধ ভাবে সংরক্ষিত প্যাথেডিন, নিজস্ব ফার্মেসীতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসন কোন অন্যায়ের কাছে পরাস্ত হবে না। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
র্যাব-৬’র স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার মেজর শামীম সরকার বলেন, ওই হাসপাতালটিতে গত ২৪ জুন একজন নারীর মৃত্যুতে কেন্দ্র করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মৃতের স্বজনরাসহ স্থানীয় জনতার উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে স্থানীয় থানা পুলিশের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। কর্তব্যরত একজন চিকিৎসক সেখানে উপস্থিত ছিলেন যার উপরে সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ধরনের উত্তেজনাকর কথা বলছিলো। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে ওই চিকিৎসকের নিরাপত্তাজনিত কারনে তাকে র্যাব হেফাজতে নেয়। পরবর্তীতে তার স্বজনদের কাছে ওই চিকিৎসককে হস্তান্তর করা হয়। র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা অনিয়ম ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএমএ ভবনের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন, সভাপতি, ডাঃ গাজী মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতিবৃন্দরা হলেন ডাঃ এম আর খান, ডাঃ মোঃ মোস্তফা কামাল, ডাঃ মোল্লা হারুনুর-অর-রশিদ। সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোঃ সওকাত আলী লস্কর, যুগ্ম-সম্পাদক ডাঃ এম বি জামান, কোষাধ্যক্ষ ডাঃ এম এ হান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ গৌতম রায়, দপ্তর সম্পাদক ডাঃ বঙ্গ কমল বসু, প্রচার সম্পাদক ফারুক আহমেদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ সৈয়েদা জাহানারা মাহমুদ, আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ বিশ্বজিৎ সরকার, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোঃ রুহুল আমিন। এছাড়া কার্যকরী পরিষদের সদস্য ডাঃ এম আশরাফ আলী, ডাঃ জগবন্ধু দাশ, অসিত বরণ বিশ্বাস, এড. সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, বিপ্লব কুমার দাশ, মোঃ হাবিবুর রহমান মিয়া, শামিম আরা নীলা, বিধান বিশ্বাস।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২৭ জুন খুলনার ন্যাশনাল হাসপাতালে সশস্ত্র আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করায় উক্ত হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়ায় এবং ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ এর ৭৩ ধারা এবং উপধারা কে পাশ কাটিয়ে অন্য ধারায় অভিযুক্তদের সাজা প্রদান করা এবং গত ২৪ জুন একই হাসপাতালে র্যাব সদস্যদের অভিযান চালানো ও কর্তব্যরত চিকিৎসককে হাসপাতালের রোগীদের অরক্ষিত রেখে র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।