টানা তিন দিন পানি কমার পর আবারও সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। একই সঙ্গে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ হুরা সাগর, কাটাখালী, ফুলজোড়, ইছামতী নদীর পানি বাড়ছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ফলে জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে ৭ জুলাই থেকে সিরাজগঞ্জে বন্যার পানি কমতে থাকায় অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া বন্যা কবলিত মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু গত ১০ জুলাই আবারও যমুনা নদীর পানি বাড়ায় বিপাকে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ। পানি বাড়ায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার (১২ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময় কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনা নদীর পানি আরও অন্তত দুই দিন বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চৌহালীতে ভাঙন রোধে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে।
এদিকে যমুনার সঙ্গে সঙ্গে জেলার অভ্যন্তরীণ করতোয়া, ফুলঝোড়, বড়াল ও চলনবিলের পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। যমুনা ও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর তিরবর্তী ও চরাঞ্চলের প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষক ও শ্রমজীবীরা।
সিরাজগঞ্জ ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ১৩৩ টন চাল, ৫ লাখ টাকা, ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। চলতি বন্যায় নৌকা ডুবে চারজন ও পানিতে ডুবে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।