অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ দেশ আবু সাঈদের, আবু সাঈদ কারও একার নয়, গোটা বাংলাদেশের। তিনি বলেন, ঘরে ঘরে লাখো আবু সাঈদ জন্মাবে। তবে আর কোনো আবু সাঈদকে যেন এভাবে প্রাণ দিতে না হয়।
আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আবু সাঈদ এখন এক পরিবারের সন্তান না। বাংলাদেশের যত পরিবার আছে, তাদের সন্তান। যারা বড় হবে, স্কুল-কলেজে পড়বে, তারা আবু সাঈদের কথা জানবে এবং নিজে নিজেই বলবে, আমিও ন্যায়ের জন্য লড়ব। আবু সাঈদ এখন ঘরে ঘরে।’
শান্তিতে নোবেলজয়ী এই বাংলাদেশি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবারই সন্তান আবু সাঈদ। হিন্দু পরিবার হোক, মুসলমান পরিবার হোক, বৌদ্ধ পরিবার হোক—সবার ঘরের সন্তান এই আবু সাঈদ। কাজেই আপনারা খেয়াল রাখবেন, কোথাও কোনো গোলোযোগ যেন না হয়।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা সবাই এই মাটিরই সন্তান। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এই মাটির সন্তানদের রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। আমরা যেন এটা নিশ্চিত করি।’
তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদ যেমন দাঁড়িয়েছে, আমাদেরকেও সেভাবে দাঁড়াতে হবে। যারা পার্থক্য করে আমরা তেমন না। আমরা সবাই বাংলাদেশি, আমরা বাংলাদেশেরই সন্তান। আবু সাঈদের মা সবার মা এবং সবার মা আবু সাঈদের মা। কাজেই তাকে রক্ষা করতে হবে, তাদের বোনদের রক্ষা করতে হবে, তাদের ভাইদের রক্ষা করতে হবে। সবাই মিলে এটা করতে হবে।’
এর আগে সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে তিনি রংপুরের পীরগঞ্জের মেরিন একাডেমিতে পৌঁছান। এরপর তিনি শহীদ আবু সাঈদের বাড়ি অভিমুখে সড়কপথে রওয়ানা হন। সেখানে পৌঁছে ১১টা ৫ মিনিটে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন। পরে স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হন। এ সময় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়া সঙ্গে ছিলেন। এছাড়াও রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসানসহ জেলা ও উপজেলার প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ১৫ মিনিট ধরে আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি সড়কপথে পীরগঞ্জে অবস্থিত মেরিন একাডেমি রংপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
শপথ গ্রহণের দুই দিন পরই কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বাড়িতে আসেন প্রধান উপদেষ্টা।