বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা ও সেনাবাহিনীর একটি স্বমিলিত প্রতিরোধে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় এবং দেশের ছাত্র জনতার বিজয় অর্জিত হয়। দেশ আজ স্বাধীণ, জনতা আজ মুক্ত। হাজারো ছাত্র জনতার প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীণতা আমাদের রক্ষা করতে হবে। মনে রাখতে হবে খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে ও রেখে গেছে তারই পৃষ্ঠপোষকতায় পালিত মানুষরূপি কিছু দানবদেরকে। খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে শনিবার (২৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে বারোটায় এক সাংবাদিক সম্মেলন খুলনার ব্যাবসায়ী সমাজের প্রতিনিধিরা এসব কথা বলে।
সাংবাদিক সম্মেলন ব্যাবসায়ীরা বলেন, খুনি হাসিনার তৈরি করা এই দানবরা এখনও আমাদের সন্তানদের (ছাত্র) রক্তে অর্জিত এই স্বাধীণতাকে কেড়ে নেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা বিবেকবান ব্যবসায়ী সম্প্রদায় চুপ করে বসে থাকতে পারি না। আমরা আমাদের সন্তানদের পরাজিত হতে দেখতে পারবো না। আমরা দেখেছি ৫ই আগস্টের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ঐ খুনি হাসিনার দানবেরা শতশত অফিস, ঘরবাড়ী, মন্দির এবং ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আগুন সন্ত্রাস, লুটপাট এবং চাঁদাবাজীর মতন অসংখ্য অপরাধের মাধ্যমে ছাত্র জনতার আন্দোলণে অর্জিত স্বাধীণতাকে নস্যাৎ ও বির্তকিত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এই অবস্থা থেকে আমাদের খুলনা ব্যবসায়ীরাও রেহাই পাইনি।
ব্যাবসায়ীরা বলেন, এখনও চলছে আমাদের খুলনার ব্যবসায়ীদের উপর নানাভাবে চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মহাউৎসব। যার ফলে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রয়েছে। এরসাথে চলছে ব্যাংক গুলোর কাবলীওলার চরিত্র। যেখানে ব্যবসায়ীরা এই চরম সংকটের ভেতর তাদের ব্যবসা বাণিজ্য যাতে চলমান থাকে সেই কার্যক্রমে ব্যস্ত ঠিক সেই মুহুর্তে ঐ সুদে মহাজন ব্যাংক গুলো কাবলীওয়ালার ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীদের তাদের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বা আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য করছে। অথচ এই দেশ ৭১ এর স্বাধীণতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই রাষ্টের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও দেশের সুনাম ও খ্যাতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের খুলনার ব্যবসায়ীরা এই কঠিন মূহুর্তে পাশে চেয়ে ছিল খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির নেত্রীবৃন্দদেরকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় দীর্ঘ ১৫টি বছর খুনি হাসিনার তৈরি করা মানবরূপী রক্তচোষা দানব বর্তমান খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি, খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের প্রথম সহ-সভাপতি, খুলনা সাধারণ মানুষের প্রাণের নেতাদের হত্যার মূলপরিকল্পনাকারী এবং নির্দেশদাতা খুনি কাজী আমিনুল হক ১৫টি বছর ধরে খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতিটাকে তার নিজের ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠান, শেখ পরিবারের, আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ের এবং খুলনার সমস্থ চিহ্নিত খুনি সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে তৈরী করেছে। ব্যবসায়ীদের প্রাণের সংগঠন খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতিকে কখনও ব্যবসায়ীদের উন্নয়নের স্বার্থের কাজে ব্যবহার করেনি এবং বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব ও ব্যবসায়ীরা জানেন না।
ব্যাবসায়ীরা আরো বলেন, ছাত্র জনতার প্রতিষ্ঠিত এই নতুন বাংলাদেশের সরকারের কাছে খুলনার সকল ব্যবসায়ীরা আজ খুনি কাজী আমিনুল হকের সকল অন্যায়ের বিচার দাবী করছে এবং খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির বিগত ১৫ বছরের আয়-ব্যয় হিসাব সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুলনার সকল ব্যবসায়ীদের সামনে প্রকাশ করার দাবী করছে। এর পাশাপাশি কাজী আমিনুল হক ও তার দোষরদের তৈরী করা খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির পাতানো কমিটি বাতিল করে প্রকৃত সমিতির সকল সদস্যদের মতামতের মাধ্যমে নতুন এডহক কমিটি তৈরী করে খুলনার সকল ব্যবসায়ীদের পাশে দাড়ানোর দাবী জানাচ্ছি এবং ব্যাংক গুলোর কাবলীওলার চরিত্র পরিত্যাগ করে খুলনা ব্যবসায়ী সমাজের পাশে দাড়ানোর অনুরোধ করছি।
সাংবাদিক সম্মেলন শেষে ব্যাবসায়িরা আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন দেশের স্বাধীণতা রক্ষায় এবং বৈষম্যতার বিরুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধের মতন হাজারো আমাদের সন্তানেরা ভয়কে জয় করা যে শক্তি আমাদের দিয়ে গেছে তারই ধারাবাহিকতায় আমরাও এই দেশের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং আমাদের ন্যায্য চাওয়াকে প্রতিষ্ঠিত করবো। তা না হলে আমাদের শহীদ সন্তানদের রক্তের সাথে বেইমানী করা হবে।