সাতক্ষীরার তালায় ‘কপোতাক্ষ নদ অববাহিকার পাখিমারা বিলের পলিদ্বারা ভরাট হওয়া খাল জরুরীভাবে খনন এবং বাস্তবায়িত টিআরএম কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবীতে’ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় তালা প্রেসক্লাবে পাখিমারা টিআরএম বিল এলাকার অধিবাসী আয়োজনে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
পাখিমারা টিআরএম বিল কমিটির বালিয়া এলাকার সভাপতি মোঃ আব্দুল আলীম সাংবাদিক সম্মেলন লিখিত বক্তব্য বলেন, কপোতাক্ষ অববাহিকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সাতক্ষীরা তালা উপজেলাধীন পাখিমারা বিলে সরকার কর্তৃক জোয়ারাধার তথা টিআরএম কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর ফলে সমগ্র কপোতাক্ষ অববাহিকার ভুক্তভোগী মানুষ জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্ত হয়েছে কিন্তু আমরা পাখিমারা বিল অধিবাসীরা টিআরএম দ্বারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। টিআরএম বন্ধ হওয়ার পর ক্ষতিসমূহ এখনও অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, টিআরএম বাস্তবায়িত হওয়ার কারণে বিলের মধ্যে নিস্কাশন খালগুলো পলি দ্বারা ভরাট হয়েছে। পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কারের নামে কর্তৃপক্ষ বালিয়া কাটপয়েন্ট থেকে ১ কি,মি, দূরে সংযোগ খাল বেঁধে টিআরএম কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ফলে এই সংযোগ খাল জোয়ারের পলি দ্বারা দ্রæত ভরাট হয়ে পানি নিস্কাশনের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এখন নদী থেকে বিলের মধ্যে পানি উঠানো হলে সে পানি যেমন নামতে পারছে না তেমনি বিলের মধ্যে বর্ষার পানিও নিস্কাশিত হতে পারছে না, সমগ্র বিল এখন জলাবদ্ধ কবলিত। যার কারণে বিলে ধান চাষ, মাছ চাষ এবং সবজি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। মানুষের জীবিকা ও ভরণ পোষণ নির্বাহের জন্য জরুরীভাবে সংযোগ খালসহ বিলের খাল খনন করা প্রয়োজন।
দ্বিতীয়ত: বিলে যতোদিন টিআরএম বাস্তবায়িত হয়েছে সেই হিসেবে জমির মালিকরা প্রাপ্য অর্থের মাত্র ১৮% টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছে, এখনও ৪৬ কোটি টাকা সরকারের কাছে বকেয়া আছে যা না পাওয়ায় এলাকাবাসীদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়েরনিকট জনগণের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোন সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত আমরা অবগত হতে পারেনি।
জনগণের দাবী: পাখিমারা বিলে পলি দ্বারা ভরাট হওয়ায় সংযোগ খাল ও অন্যান্য খালগুলো খননের জন্য জরুরীভাবে প্রকল্প গ্রহণ এবং অতিদ্রæত বাস্তবায়িত টিআরএম কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা করা।
আব্দুল আলীম বলেন, সম্প্রতি বিল এলাকায় জরুরীভাবে পানি নিস্কাশনের জন্য ১কি,মি, খালে একটি প্রণালী সৃষ্টির জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা এবং উত্তরণ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছেন।
সংযোগ খালে প্রণালী সৃষ্টি হলে সাময়িকভাবে কিছু উপকার পাওয়া যাবে, তবে দ্রæত সময়ের মধ্যে জোয়ারের পলি দ্বারা এ প্রণালী আবারও ভরাট হবে এবং আমরা বিশ্বাস করি বিলের মধ্যের খালগুলো পূর্বাবস্থায় থাকায় জলাবদ্ধ সমস্যা থেকেই যাবে। মূলতঃ সংযোগ খাল ও ভিতরের পলি ভরাটকৃত খালগুলো পূর্ণ ডিজাইনে খননের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে।
আব্দুল আলীম বলেন, আমরা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলকে আপনাদের মাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আপনাদের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ পাখিমারা বিল অধিবাসীদের জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচাতে তাদেরজীবন-জীবিকা স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়ান।