বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে মেনে নেবে না জনগণ। সংবিধান পুনঃলিখন না সংশোধন হবে তা পার্লামেন্ট ঠিক করবে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এ সময় প্রশাসন থেকে ফ্যাসিস্টদের সমর্থক, দোসর ও মদদদাতাদের সরাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং শহীদদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা নস্যাৎ করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
এদিকে, গতকাল রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তির স্বাদ পায়, গণতন্ত্রের পথ সুগম করে। অসংখ্য ব্যক্তি ও পরিবার রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে যাদের ত্যাগের মহিমায় আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘জুলাই গণহত্যায়’ ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে শহীদ হন ৮৭৫ জন মানুষ, যার মাঝে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দেশজুড়ে শহীদ হওয়া সব শ্রেণিপেশা-রাজনীতির মানুষের এ বিশাল অংশ যে বিএনপিরই নেতাকর্মী এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং আমাদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের অনিবার্য ফল।
তিনি বলেন, পোশাকশ্রমিক কিংবা রিকশাচালক, পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বাম কিংবা ডান আদর্শের অনুসারী, সকল মত ও পথের রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতাহতের পরিচয় যাই হোক না কেন, প্রতিটি প্রাণের মূল্য ও রক্তের মর্যাদা সমান। আর তাই, সমান গুরুত্বের সঙ্গেই প্রণয়ন করতে হবে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তালিকা ও নিশ্চিত করতে হবে সুবিচার। শেখ হাসিনার পদত্যাগের জন্য যে জাতীয় ঐকমত্য আমরা দেখতে পাই, তা কিন্তু হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি মূলত অবৈধ সরকারের অত্যাচার-অবিচার, দুর্নীতি-দুঃশাসন, বঞ্চনা-অবজ্ঞা, এবং শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।