হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আসন্ন। এ উপলক্ষে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যান্ত অঞ্চলের মন্দিরগুলোতে সাজ সাজ অবস্থা। বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। এবার উপজেলা ৬৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিমা তৈরিতে কারিগরের ব্যস্ততা জানান দিচ্ছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা।
এ বছর ২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবীপক্ষ। ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। আগামী ১৩ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব সমাপ্ত ঘটবে।
এদিকে, এ উৎসবকে ঘিরে দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে পাশাপাশি চলছে মÐপ মÐপে প্রস্তুতি। এখন শারদীয় মেতে ওঠার অপেক্ষায় সনাতন স¤প্রদায়ের মানুষেরা। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিমা শিল্পীরা কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে রাতভর করছেন প্রতিমা তৈরির কাজ।
নিখুঁত হাতের কারুকার্য দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজার সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। এই উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, মন্ডপে মন্ডপে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এখন শেষ পর্যায়ে মূর্তিতে রং-তুলির আঁচড়ের কাজ চলছে। অন্যদিকে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি ও ডেকারেশনসহ অন্যান্য কাজগুলোও ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও মন্ডপের জন্য তৈরি করা হয়েছে লক্ষী , সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেঁচা, হাঁস, সহ অনেক প্রতিমা। প্রতিমা তৈরি কাজ দেখতে বিভিন্ন মন্ডপে শিশু-কিশোরদের ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা শিল্পীরা প্রতিমা তৈরীর কাজে গভীর মনোনিবেশ করেছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তারা দেবী মূর্তি তৈরী করছেন।
মানসা প্রতিমা গড়তে ভাস্কর অখিল বিশ্বাস ও অসিত জোয়ার্দ্দার সহ কয়েকজন প্রতিমা তৈরীর কারিগর জাানান, প্রতিমা গড়তে দুর দুর্দান্ত থেকে মাটি সংগ্রহ করে দো-আঁশ মাটির কাজ করা হয়। আর এসব প্রতিমা তৈরীতে আমাদের দম ফেলার ফুসরত নেই। দেবী মা দুর্গা তার সাথে বিদ্যার দেবী স্বরসতী, ধন সম্পদের দেবী লক্ষী এবং দেব সেনাপতি কার্তিক ও গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুটিয়ে তুলবো নিপুন হাতের ছোঁয়ায়।
সেই সাথে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এ বাজারে পরিশ্রমের পর প্রতিমা তৈরি করে যে মজুরি পাই তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে চলে গেছে। নানা সংকটের মধ্যে টিকে থাকা কষ্টকর। তাই প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি অনেকের অন্য পেশার কাজ করতে হচ্ছে।