কিছু খাবার ও পানীয়তে মিষ্টি স্বাদ তৈরির জন্য কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত রাসায়নিক পদার্থ হলো কৃত্রিম চিনি। একে চিনির বিকল্পও বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় গবেষকরা জানিয়েছেন, কৃত্রিম চিনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা ঘোষণা করেছেন, এটি হয়তো ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহারের বিরুদ্ধে নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। কৃত্রিম চিনির ক্ষতিকর দিকগুলো হলো—
ক্যান্সারের ঝুঁকি : কৃত্রিম সুইটনার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে কি না তা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা রয়েছে। একটি গবেষণায় মূত্রাশয় ক্যান্সারের সঙ্গে স্যাকারিনের সম্পর্ক পাওয়া গেছে। আরেকটি গবেষণায় লিভার ক্যান্সারের ‘সম্ভাব্য’ যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ায় : একটি বড় গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চতর কৃত্রিম সুইটনার সেবন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকসহ কার্ডিওভাসকুলার বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কৃত্রিম সুইটনার সেরিব্রোভাসকুলার রোগেরও ঝুঁকি বাড়ায়। কৃত্রিম চিনিতে থাকা এরিথ্রিটল নামের একটি যৌগ রক্ত জমাট বাঁধা, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে : টাইপ-২ ডায়াবেটিস মহামারি আকার ধারণ করা রোগ।
গ্লুকোজ-অসহিষ্ণুতায় আক্রান্ত হয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া বা প্রি-ডায়াবেটিক কন্ডিশনের ক্ষেত্রেও কৃত্রিম চিনি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, আসলে যে মহামারি রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এটা চালু করা হয়েছে, বাস্তবে সেই রোগের ঝুঁকিই বাড়িয়ে দিতে পারে এসব কৃত্রিম চিনি।
ক্ষুধা বৃদ্ধি : যদিও অনেক মানুষ ওজন কমানোর জন্য কৃত্রিম মিষ্টির দিকে ঝুঁকছেন, এতে আসলে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, কৃত্রিমভাবে মিষ্টি করা খাবার ও পানীয় মানুষের ক্ষুধা এবং চিনি গ্রহণের ইচ্ছা বৃদ্ধি করতে পারে। ক্ষুধা বৃদ্ধি একটি স্বাস্থ্যঝুঁকি, কারণ এটি অতিরিক্ত খাওয়ার প্রতি মনোযোগী করে তুলতে পারে।
যার ফলে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।
বিষণ্নতা : গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু কৃত্রিম মিষ্টি অনেকের মধ্যে বিষণ্নতা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যাদের পূর্ব-বিদ্যমান শর্ট টেম্পার রয়েছে।
মাথা ব্যথা : বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এই কৃত্রিম চিনি কিছু মানুষের মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।
পরামর্শ দিয়েছেন
নাহিদা আহমেদ
পুষ্টিবিদ, ফরাজী হাসপাতাল
বারিধারা শাখা, ঢাকা